পাইকর থানার সদাশিবপুর বিশোড় হাইস্কুলে। নিজস্ব চিত্র
প্রধান শিক্ষককে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল স্কুলেরই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের বিরুদ্ধে। সোমবার প্রধান শিক্ষককে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এই ঘটনার প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকেরা। ঘটনাটি ঘটেছে পাইকর থানার সদাশিবপুর বিশোড় হাইস্কুল। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাইকর থানার বড় পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
উচ্চ মাধ্যমিক ওই স্কুলে ১৫০০ ছাত্রছাত্রীর জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ১৩ জন। এ ছাড়া পার্শ্বশিক্ষক এবং আমন্ত্রিত শিক্ষক মিলিয়ে রয়েছেন ৭ জন। চলতি বছর ৬ ফেব্রুয়ারি ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, এত দিন হয়ে গেলেও তাঁকে স্কুলের ‘চার্জ’ বুঝিয়ে দেয়নি স্কুল পরিচালন সমিতি এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। উল্টে, তাঁকে স্কুল থেকে তাড়ানোর পরিকল্পনা শুরু হয়েছে।
শান্তশ্রীবাবুর অভিযোগ, ‘‘প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মিড-ডে মিল এবং কন্যাশ্রী নিয়ে বেশ কিছু দুর্নীতি নজরে আসে। এই দুর্নীতি এবং অনিয়মিত হাজিরার প্রতিবাদ করায় আমাকে বিভিন্ন ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ দিন আমাকে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়, হেনস্থাও করা হয়।’’ এ দিন বিক্ষোভকারী অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা প্রধান শিক্ষককে সমর্থন করে দাবি করেন, মার্চের শেষ থেকে স্কুল বন্ধ। তার আগে শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে সময়ে আসতেন না। পঠনপাঠন ঠিক মতো হত না। ক্লাসের মধ্যে মোবাইল দেখা হত। নতুন প্রধান শিক্ষক এক মাসের কিছু সময়ের মধ্যেই এই সব বন্ধ করায় তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে।
অভিভাবক বসির আহমেদ, ওবাইদুর রহমানেরা বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে বর্তমান প্রধান শিক্ষক সঠিক পদক্ষেপ করছেন। স্কুলের বিভিন্ন চুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু, প্রধান শিক্ষকের পাশে সাতটি গ্রামের মানুষজন, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক আছেন। ওঁকে স্কুল থেকে তাড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে। প্রধান শিক্ষক স্কুল থেকে চলে গেলে আরও বড় আন্দোলনে নামব।’’
স্কুলের বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ দিন কিছুই বলতে রাজি হননি। ফোন বন্ধ পরিচালন সমিতির সভাপতি হাবিবুর খানের। জেলার স্কুল পরিদর্শক লক্ষ্মীধর দাস বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। স্কুলের থেকে একটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’