থমকে: উপরবাটরিতে। নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনার কিস্তি পাইয়ে দেওয়ার জন্য টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠল সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে। পুরুলিয়ার ঝালদার নওয়াহাতু পঞ্চায়েতের উপরবাটরি গ্রামের ঘটনা। মঙ্গলবার ঝালদা ২ ব্লক প্রশাসনের কাছে ওই অভিযোগ জমা পড়ে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।
স্থানীয় এবং প্রশাসন সূত্রে জানান গিয়েছে, কিছু দিন আগে আবাস যোজনায় ঘর তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ঢুকেছিল উপরবাটরি গ্রামের দিনমজুর রাধু কর্মকারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তা দিয়ে কাজ করার পরেও দ্বিতীয় দফার টাকা পাননি বলে অভিযোগ রাধুর। তিনি বলেন, ‘‘কিস্তির টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী সাত্তার আনসারি। দিতে না পারায়, টাকা আটকে দিয়েছেন।’’
অভিযুক্ত সাত্তারের স্ত্রী খাতুনা বিবি নওয়াহাতু পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্যা। এ দিন বাড়িতে ফোন করা হলে সাত্তার ধরে বলেন, ‘‘খাতুনা মেয়ের বাড়ি গিয়েছেন। কথা বলা যাবে না।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে সাত্তারের দাবি, ‘‘রাধু কর্মকার প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও কাজ করাননি। তাই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আসেনি।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাস যোজনায় প্রতি দফায় কাজের পরে, পঞ্চায়েত থেকে ছবি তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্দিষ্ট ‘পোর্টাল’-এ তা তোলার পরে, পরের কিস্তির টাকা আসে। রাজুর অভিযোগ, প্রথম দফার কাজের পরে তাঁর বাড়ির ছবিও তোলা হয়নি। অভিযোগপত্রে সই করা রাধুর পড়শি কীর্তন কর্মকার ও বিভূতি কর্মকারদের দাবি, ‘‘আমরা দেখেছি, কাজ হয়েছে। দাবিমতো টাকা না দেওয়ায় ওকে হয়রান করা হচ্ছে।’’
নওয়াহাতু পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের সুধীর মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘ভিলেজ রিসোর্স পার্সনের বদলে পঞ্চায়েতের লোক গিয়ে এখন পরিদর্শন করছেন। ওই ব্যক্তির বাড়ির ছবি তোলা না হয়ে থাকলে, তুলে আনা হবে। তাড়াতাড়ি যাতে টাকা পান, সেটা দেখা হচ্ছে।’’
বিডিও (ঝালদা ২) অরুণকুমার বিশ্বাস বুধবার বলেন, ‘‘তদন্ত হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে, বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ করব।’’ তিনি জানান, অভিযোগকারী যাতে নিজের প্রাপ্য পান, তা দেখতে বলা হয়েছে দায়িত্বে থাকা আধিকারিককে।
তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সাধারণ সম্পাদক শরৎ কুমারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ রকম ঘটনা সত্যি দুর্ভাগ্যজনক।’’ বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সহ সভাপতি শ্রীপতি মাহাতো বলেন, ‘‘অবিলম্বে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।’’