ক্ষোভে পাথর ভাঙার ক্রাশারে আগুন স্থানীয়দের। নিজস্ব চিত্র।
ট্রাকের ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। তবে গুজব রটে পাথর বোঝাই গাড়ির ধাক্কায় ওই ঘটনা ঘটেছে। তার জেরে উত্তেজিত স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ লাগোয়া একটি পাথর ভাঙার কল বা ক্রাশারে আগুন লাগান। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে ঘেরাও হয় পুলিশও। রবিবার সকালে পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার রাঙ্গুনিগোড়া এলাকার ঘটনা।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম নির্মল মণ্ডল (৩৭)। বাড়ি কাশীপুর থানার চিটা রঘুনাথপুর গ্রামে। গুরুতর জখম, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী মঞ্জুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। বিকেলে ক্রাশার কর্তৃপক্ষ কাশীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযান চালিয়ে পুলিশ আট জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে গ্রাম থেকে মোটরবাইকে স্ত্রীকে চাপিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন নির্মল। রাস্তায় একটি খালি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের ধাক্কা মারে। সূত্রের খবর, বালি পরিবহণ করা ট্রাকটি এলাকাতেই কোথায় বালি ফেলে ফিরছিল। ওই রাস্তা দিয়ে পাথর নিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে স্থানীয় ক্রাশারগুলির ডাম্পার ও ট্রাক। গুজব ছড়ায় তেমনই কোনও পাথর বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এর পরেই উত্তেজিত জনতা রাঙ্গুনিগোড়া গ্রামের পাহাড়ে থাকা একটি ক্রাশারে হামলা চালায়। সেখানকার কাঁটা ঘরে (যেখানে গাড়ি ভর্তি পাথরের ওজন করা হয়) ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় ক্রাশারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ডাম্পারেও। সেখানে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। পরে রঘুনাথপুর দমকলকেন্দ্র থেকে দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাশীপুর থানার পুলিশ। আরও কয়েকটি থানা থেকেও পুলিশ পাঠানো হয়। পৌঁছন জেলা পুলিশ সুপার (অপারেশন) অবিনাশ ভীমরাও যাধোয়ার, রঘুনাথপুরের এসডিপিও রোহেদ শেখরা।
প্রায় কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে ক্রাশার কর্তৃপক্ষের দাবি, এ দিনের দুর্ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উত্তেজিত করে ওই কাণ্ড ঘটায় কিছু দুষ্কৃতী।