Baul Academy

বাউল অ্যাকাডেমির কাজে গতি কমেছে

এ বারের জয়দেব মেলা শুরুর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর সাধের বাউল অ্যাকাডেমির কাজ শেষ হয়নি।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২৪
Share:

কাঠামোটুকুই হয়েছে বাউল অ্যাকাডেমির। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

ঘোষণা হয়েছিল ২০১৬ সালে। পরের বছর হয়েছিল শিলান্যাস। এ বারের জয়দেব মেলা শুরুর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর সাধের বাউল অ্যাকাডেমির কাজ শেষ হয়নি। তা দেখে অনেকের মনে হয়েছে, তা হলে কি কাজের গতি শ্লথ হয়ে পড়ল। জেলা প্রশাসন অবশ্য তেমনটা মানছে না।

Advertisement

প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, আট কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ ওই কাজের জন্য। বীরভূম জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে জোর কদমেই এগোচ্ছিল কাজ। কিন্তু, গত বছরের জুন, জুলাই থেকে অ্যাকাডেমি গড়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা এই খাতে কোনও টাকাপয়সা না পাওয়ায় কাজের গতি অনেকটাই কমে গিয়েছে। এমনটা না হলে নাকি এ বারের জয়দেব মেলার আগেই উদ্বোধনের দোরগড়ায় পৌঁছে যেত কাজ।

২০১৬ সালের জানুয়ারিতে জয়দেবে এসে বাউল অ্যাকাডেমি তৈরি হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাত ধরে অ্যাকাডেমির শিলান্যাস হয়েছিল পরের বছরের জানুয়ারিতেই। কাজ শুরু হয় সেই বছর। প্রত্যাশা ছিল ২০২০ সালের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী জয়দেবে এলে তাঁর হাত ধরেই উদ্বোধন হবে সেটির। এখনও মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচি নির্দিষ্ট হয়নি। তবে জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এলে তার মধ্যে ওই কাজ শেষ করা প্রায় অসম্ভব। প্রশাসনেরই একটা সূত্র বলছে, ‘‘জয়দেবে মনের মানুষ আখড়ার কাছে সরকারি জমিতে তৈরি হওয়া বাউল অ্যাকাডেমির অনেক কাজই বাকি।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী শিলান্যাস করে যাওয়ার কয়েক মাস পরেই বাউল দর্শন আর সাধনার কথা মাথায় রেখে অ্যাকাডেমি তৈরিতে ঝোঁকে রাজ্য, জেলা প্রশাসন ও বাউল অ্যাকাডেমির জন্য তৈরি কমিটি। রাজ্য ও জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ওই অ্যাকাডেমিতে পূর্ণদাস বাউল, পরীক্ষিৎ বালা, কার্তিকদাস বাউল, মনসুর ফকির, লক্ষ্মণদাস বাউলেরা রয়েছেন। বাউল অ্যাকাডেমির সভাপতি তথা বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মিলনকান্তি বিশ্বাস ২০১৭ সালের জুন মাসে জয়দেবের ভক্তিভবনে ভবন তৈরি, বাউল ও ফকির গান সংগ্রহ-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসেন কমিটির সদস্যরা।

রাজ্যের ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ছিলেন বৈঠকে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের শেষ ভাগে বিশাল মাপের ওই অ্যাকাডেমি গড়ার কাজে হাত দেয় বীরভূম জেলা পরিষদ নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা।

যে অ্যাকাডেমি ভবনে থাকছে একটি স্টুডিও। যেখানে অত্যাধুনিক রেকর্ডিং ব্যবস্থা থাকবে। সংগৃহীত গান, সিডি, পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণের জন্য থাকছে আর্কাইভ। বাউল গান নিয়ে যা কাজ হচ্ছে, তা সংগ্রহে রাখার জন্য লাইব্রেরি এবং মিউজিয়ামের ব্যবস্থা থাকছে। রয়েছে ২৫০ আসনের অডিটোরিয়াম কাম সেমিনার হল। মূল ভবনের বাইরে থাকছে মুক্তমঞ্চ।

দু’বছরের বেশি সময়ে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। লক্ষ্যও ছিল ২০২০ সালের আগেই কাজ শেষ করার। কিন্তু, জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস হল বীরভূম জেলা পরিষদে টালমাটাল পরিস্থিতির জন্যই একেবারে কাজ বন্ধ না হলেও কাজে গতি কমেছে। এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ররা। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেছেন, ‘‘প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে।’’ জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন না-থাকলে টাকাপয়সা আটকাবে কেন।’’ বাউল আকাডেমির সভাপতি মিলনকান্তি বিশ্বাস বলছেন, ‘‘জেলা পরিষদ কাজটি করাচ্ছে। প্রায় ৮০ শতাংশ হয়েছে। শুনেছি চলতি বছরেই কাজ শেষ হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement