শান্তিনিকেতনে পূর্বপল্লির মাঠে ‘বিকল্প’ পৌষমেলার প্রস্তুতি চলছে। রবিবার থেকে শুরু হয়েছে স্টল তৈরির কাজ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
এ বারের ‘বিকল্প’ পৌষমেলা হবে ‘শিশুবান্ধব’। এমন ভাবনাই নিয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। ১০ হাজার বর্গফুটের ওই শিশুবান্ধব কর্নারটি মেলার মধ্যে নিজেই একটি মেলা বলে দাবি করেছেন জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিরুপম সিংহ।
বিশ্বভারতীর অনুমতি মিলতেই তিন বছর পরে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে ‘বিকল্প’ পৌষমেলা করার প্রস্ততি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া পাঁচ দিনের মেলা যাতে সর্বাঙ্গীন সুন্দর হয়, সে জন্য তৎপর প্রশাসন। তারই অঙ্গ হিসাবে এ বারের মেলাকে শিশুবান্ধব করার ভাবনা। জানা গিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত যৌথ ভাবে নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন ও রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মেলায় শিশু অধিকার লঙ্ঘনের যে-সব ঘটনা ঘটে, শিশুশ্রম তার অন্যতম। পৌষমেলায় প্রচুর সংখ্যায় স্টল থাকে। থাকে নানা রাইড। অভিজ্ঞতা বলে, অন্যান্য মেলায় বেশ কিছু সংখ্যক শিশু শ্রমিকের দেখা মেলে। পেটের দায়ে শৈশব নষ্ট করে তাদের কাজে পাঠান অভিভাবকেরা। তেমন এক জন শিশু শ্রমিকও যদি এই ‘বিকল্প’ পৌষমেলায় দেখতে পাওয়া যায়, তাকে খুঁজে বের করে উদ্ধার করার জন্য টিম থাকবে। থাকবে শিশুশ্রম বিরোধী সচেতনতা প্রচার। ছোটদের জন্য মেলার মধ্যেই একটি শিশুবান্ধব কর্নার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য, এক জন শিশু শ্রমিকও যাতে পৌষমেলায় না-থাকে, তা নিশ্চিত করা। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক বলেন, ‘‘টানা নজরদারি থাকবে। শিশু শ্রমিককে উদ্ধারের জন্য মেলায় ঘুরবে ‘রেসকিউ টিম’। যে-সব স্টল শিশু শ্রমিক মুক্ত হবে, সেগুলিকে সরকারি শংসাপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। সই থাকবে জেলাশাসক ও শিশু কমিশনের আধিকারিকের।’’
সূত্রের খবর, এ ছাড়াও ওই শিশুবান্ধব কর্নারে থাকছে ছোটদের জন্য নানাবিধ বিনোদনের ব্যবস্থা। সেখানে শিশুরা খেলাধূলা করতে পারবে। নানা ধরনের নিখরচার রাইড উপভোগ করতে পারবে ছোটরা। বসে আঁকো প্রতিযোগিতা সহ নানা মজার প্রতিযোগিতাও থাকছে। সংলগ্ন মঞ্চে চলবে শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জেলা প্রশাসন তরফে জানানো হয়েছে, শিশু শ্রমিক মুক্ত মেলা করার পাশাপাশি অন্যান্য অধিকার সুরক্ষিত রাখতে ঠিক কী করা উচিত, সে সম্পর্কেও সচেতনতা প্রচার চলবে মেলার
পাঁচ দিন।