কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
হাই কোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ আগেই খারিজ করেছিল। এ বার ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেলেন ঝালদার তৃণমূলের পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল। উপপুরপ্রধানের ২১ নভেম্বর তলবিসভা ডাকার মধ্যে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে দাবি করে আগে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে মামলা করেছিলেন সুরেশ। সেখানে বিচারপতি মামলাটি খারিজ করে অহেতুক আদালতের সময় নষ্ট না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তারপরে ডিভিশন বেঞ্চে সেই একই আবেদন করেন সুরেশ। শুক্রবার সেটিরশুনানি ছিল।
পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা কাউন্সিলরদের তরফে আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী বলেন, ‘‘এ দিন বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায় ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু মামলাটি খারিজ করাই নয়, এ ব্যাপারে আদালতের সময় যাতে আর নষ্ট না করেন, সে ব্যাপারে তাঁকে সতর্ক করেছেন।’’ তাঁর দাবি, ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানিয়েছে, ২১ নভেম্বরেই তলবিসভা হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরই যেখানে অনাস্থার পক্ষে, সেখানে আস্থা প্রমাণের তলবিসভা নিয়ে পুরপ্রধানের এত জটিলতা কেন?
ঘটনা হল, বিক্ষুদ্ধ সাত কাউন্সিলর তাঁরা যাতে নির্ভয়ে তলবিসভায় ভোট দিতে যেতে পারেন, সে জন্য গত বুধবার হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সেই মামলার শুনানিতে জানিয়েছিলেন, তাঁরা যাতে নিশ্চিন্তে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারেন, তা প্রশাসনকে সুনিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, পূর্ব নির্ধারিত ২১ নভেম্বরই তলবিসভা হবে।
বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের অন্যতম শিলা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর কাউন্সিলর পদ খারিজের আবেদনের প্রেক্ষিতে এসডিও তাঁকে শো-কজ় করেছিল। তা নিয়ে শিলা হাই কোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার পরেও এসডিও এবং পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক ফোনে তাঁর কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেন। তা নিয়ে এ দিন বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে শুনানি হয়। আগামী ২৩ নভেম্বর বিচারপতি মামলাটি শুনবেন বলে জানিয়েছেন কৌস্তভ। তলবিসভা ঘিরে হাই কোর্টে একের পর এক মামলা চলায় বিরক্ত শহরবাসীর একাংশ। রাজনৈতিক তরজাও চলছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব বড় মুখ করে বলেছিলেন, কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাক। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা শুধু দেখানোই নয়, পুরপ্রধানকে গদি থেকে সরাতে ১২ জনের মধ্যে সাত জন কাউন্সিলর এককাট্টা হয়ে আদালতে আইনি লড়াই-ও চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন তৃণমূল কী করছে?’’
যদিও সুরেশকে এ দিন বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএস-এর। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘ঝালদার বিষয়টি দলীয় স্তরে দেখা হচ্ছে। আদালতের নির্দেশ সম্পর্কে আমার কাছে খবর নেই। না জেনে মন্তব্য করব না।’’