পৌষ মেলার প্রস্তুতি।
এ বারের পৌষ মেলা চার দিনের হলেও মেলা ভাঙার জন্য বিশ্বভারতীর তরফ থেকে দু’দিন সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই দু’দিন মেলায় কেনাবেচা আটকাতে কারা নজরদারি চালাবেন সেই নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিগত বছরগুলিতে যত অভিযোগ উঠেছে পৌষমেলার শেষে এই ভাঙা মেলাকে কেন্দ্র করেই। কারণ ভাঙা মেলাতেই পরিবেশ দূষণ সবচেয়ে বেশি হয় বলে অভিযোগ। এ জন্য পৌষ মেলা নিয়ে দু’বার মামলাও হয়েছে পরিবেশ আদালতে। তাই ভাঙা মেলা আটকাতে প্রথম থেকেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন এ বার চার দিনের মেলা করা হবে। কিন্তু পৌষ মেলা নিয়ে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে অন্য দাবির মধ্যে ছিল পৌষ মেলা চারদিন ও দুদিনের ভাঙ্গা মেলা করতে হবে । বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী সমিতির মধ্যে বহু আলোচনার পর মঙ্গলবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন এ বারের পৌষ মেলা চারদিনের করা হবে। মেলা ভাঙার জন্য আরও ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরেও প্রশ্ন উঠছে, মেলা ভাঙার জন্য বিশ্বভারতীর তরফ থেকে যে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে, সেই সময়ে বেচাকেনা হচ্ছে কি না তা কারা নজরদারি চালাবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলা নিয়ে বিশ্বভারতীর সঙ্গে বৈঠকেই জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল মেলার চার দিন মেলাতে নজরদারি চালানো হবে। কিন্তু মেলা তোলার ক্ষেত্রে বা মেলা শেষে মেলাতে কেনাবেচা হচ্ছে কি না তা নজরদারি চালাতে পারবে না জেলা প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে বিশ্বভারতীকেই নজরদারি চালাতে হবে বলে জানিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা। বিশ্বভারতীর তরফ থেকে শুক্রবারই পৌষ মেলা পর্যবেক্ষণের জন্য মেলার মাঠে খোলা হচ্ছে বিশ্বভারতীর ক্যাম্প অফিস। এই অফিসে উপাচার্য সহ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি থাকবে। অফিসটি ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। এই ক্যাম্প অফিস থেকেই মেলার নজরদারিও করা হবে।
এ ছাড়াও মেলাতে নজরদারি চালানোর জন্য বিশ্বভারতীর একটি কন্ট্রোল রুম ও মেলায় নিরাপত্তার খাতিরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বেশ কয়েকটি কন্ট্রোল রুম করা হচ্ছে। এ ছাড়াও বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারের পৌষ মেলা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তা দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে একটি দল পাঠানো হয়েছে। মেলা যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা যায় তার দিকেও নজর রাখবে ওই দলটি। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা মেলা ভাঙার জন্য যে সময় দেওয়া হয়েছে, সেই মেলায় কেনাবেচা হচ্ছে কি না তার নজর কারা রাখবেন তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘মেলা শেষে সুষ্ঠুভাবে মেলা তুলে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি ব্যবসায়ী সমিতি আমাদের দিয়েছে তাদের প্রতি বিশ্বাস রয়েছে আমাদের। এরপরও যেমন দরকার পড়বে সেই রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’