তদন্তে: ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করছে ফরেন্সিক দল। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
বন্ধুকে মারধর করে নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে যে যুবকদের বিরুদ্ধে, তারা এখনও অধরা। পুলিশের দাবি, দোষীদের ধরার সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। শনিবার ঘটনাস্থলে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ফরেন্সিক দল নমুনা সংগ্রহ করে।
বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে তদন্ত চলছে অভিযুক্তদের স্কেচও করানো হয়েছে। আশা করি, তারা খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে।” নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তার সমস্ত রকম শারীরিক পরীক্ষা করে এ দিন বিকেলে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই আদিবাসী নাবালিকা তার এক বন্ধুর সঙ্গে চড়কের মেলা দেখতে গিয়েছিল। অভিযোগ, মেলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে কয়েক জন যুবক তাদের পথ আটকায়। নাবালিকার বন্ধুকে মারধর করে মেয়েটিকে নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে ওই যুবকেরা গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। সেখানেই মেয়েটিকে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। শুক্রবার স্থানীয় থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার।
ঘটনার দু'দিন পেরিয়ে গেলেও কোনও অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে এ দিন সকালে মিছিল করে স্থানীয় থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মী-সমর্থকেরা। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বকুল ঘড়ুই। এ দিন নির্যাতিতার গ্রামে যায় বিজেপি-র প্রতিনিধিদল। দলে ছিলেন বিজেপি-র দুই সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা ও অষ্টম মণ্ডল, রাজ্য এসটি মোর্চার সম্পাদক সুকল মাড্ডি, বিজেপি মহিলা মোর্চা বেশ কয়েক জন কার্যকর্তা। গ্রামে গিয়ে তাঁরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের কটাক্ষ করে ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘যেখানে ঘটনা ঘটেছে, তার কিছুটা দূরেই থাকেন রাজ্যে অন্যতম মন্ত্রী, তৃণমূলের জেলা সভাপতি। অথচ তাঁদের চোখে এই সমস্ত কিছু পড়ে না।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, আর্থিক ভাবে অক্ষম একটি পরিবারের মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে, অথচ এখনও কেউ গ্রেফতার হল না! রাজ্যে ৩৫৬ ধারা কার্যকর করা দরকার বলে দাবি করেন অষ্টম মণ্ডল।
এ দিন ওই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে জেলা কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলও। তাতে ছিলেন জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ, তপন সাহা, শিবকিঙ্কর সাহা সহ দলের কর্মীরা। মিল্টনের অভিযোগ, “এই বাংলা সরকারের হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। খুন-ধর্ষণ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরাও চাই, পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা হোক।”