দ্বিমুখী নীতিতে রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বেড়োয় পাহাড় কাটা-বিরোধী আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এক দিকে, পাহাড় বাঁচাও কমিটির সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের সংস্রব না রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে শাসকদল। অন্য দিকে, পাহাড় থেকে গ্রানাইট বের করা যে কোনও ভাবেই বন্ধ করা হবে না, তা বার বার কমিটিকে বৈঠকে ডেকে স্পষ্ট করে দিচ্ছে প্রশাসন। মঙ্গলবার এক বৈঠকে ফের সে কথা মনে করিয়ে দিল মহকুমা প্রশাসন।
এ দিন, বেড়ো গ্রামের পাহাড় বাঁচাও কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ওই প্রকল্পের সমস্যা মেটাতে আলোচনায় বসেছিলেন রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি, রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায় ও ওই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা মাইনস অ্যান্ড মিনারেল ডেভেলপমেন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের (এমডিটিসি) জেনারেল ম্যানেজার এস কে শূর। বৈঠকে কমিটিকে ফের জানানো হয়, বেড়ো গ্রামের গ্রানাইট হাব তৈরির সরকারি প্রকল্প বন্ধ করা হবে না। তবে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজ করবে এমডিটিসি ও প্রশাসন।
বৈঠক শেষে বিধায়ক দাবি করেছেন, ‘‘ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। প্রকল্প নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল। তা মিটে গিয়েছে।’’ যদিও পাহাড় বাঁচাও কমিটির কর্মকর্তারা পাল্টা দাবি করেছেন, পাহাড় কেটে পাথর বের করাতেই তাঁদের আপত্তি। তাই প্রকল্প বন্ধ করার দাবি থেকে সরছেন না। বেড়োর প্রকল্পের কাজ অবশ্য চলছে।
মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘এ দিন জানানো হয়েছে, পাহাড় কাটার এলাকা চিহ্নিত করে দেবে এমডিটিসি। বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা পরিবেশ বাঁচিয়েই কাজ করবে। যত গাছ কাটা হবে, তার কয়েকগুন বেশি লাগানো হবে।” এমডিটিসি-ও জানিয়েছে, পাহাড়ের উপর নয়, মাটি খুঁড়েই গ্রানাইট বের করা হবে। পাহাড়ের ক্ষতি হওয়ার অমূলক আশঙ্কা করছে কমিটি।
রবিবার তৃণমূলের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মীকে পাহাড় বাঁচাও কমিটির মিছিল ও সভায় দেখতে পাওয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছিল শাসকদলের অন্দরেই। শাসকদলের নেতা-কর্মী হয়েও সরকারি প্রকল্পের বিরোধিতা করার ঘটনায় কড়া মনোভাব নিয়েছিলেন বিধায়ক। ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে দলগত ব্যবস্থার বার্তা দেন। তারপরেই কমিটির সঙ্গে দূরত্ব রাখতে দেখা যায় যাচ্ছে ওই নেতা-কর্মীদের। এ দিনের বৈঠকেও তাঁদের দেখা যায়নি। বিধায়ক এ দিন ফের বলেন, ‘‘আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা প্রকল্পের বিরোধিতা করা লোকজনের সাথে নেই।”