জঙ্গলে পাওয়া সেই ট্র্যাপ ক্যামেরা। নিজস্ব চিত্র
পুরুলিয়া জেলার ঝালদার জঙ্গলে মিলল রহস্যজনক ট্র্যাপ ক্যামেরা। এক সময় মাওবাদী উপদ্রুত ওই এলাকায় ট্র্যাপ ক্যামেরা উদ্ধারের ঘটনায় সতর্ক প্রশাসন। পাশাপাশি, বন্যপ্রাণীর আনাগোনার রাস্তায় ওই ক্যামেরা চোরাশিকারিরা লাগিয়েছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার ঝালদা-বাঘমুণ্ডি সীমানার কর্মাডি গ্রামের অদূরে খামরি পাহাড়ে শুকনো কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে ওই ক্যামেরাটি দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা প্রথমে সেটাকে বোমা বলে সন্দেহ করেন। খবর দেওয়া হয় ঝালদা থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও তাতে হাত দেয়নি। দূর থেকে সেটার ছবি তোলেন পুলিশকর্মীরা। একদা মাওবাদী উপদ্রুত ওই এলাকায় অযথা ঝুঁকি নিতে চায়নি পুলিশ। এর পর খবর দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মীদের এবং বন দফতরে। বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বুঝতে পারেন যে ওটা একটি ট্র্যাপ ক্যামেরা। তাঁরা ক্যামেরাটি খুলে নিয়ে যান ঝালদা বন দফতরের কার্যালয়ে।
কারা, কী উদ্দেশ্যে ওই ক্যামেরাটি জঙ্গলে বসিয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ওই পাহাড়ে হাতি, ময়ূর, হায়না-সহ একাধিক প্রজাতির বন্যপ্রাণীর যাতায়াত রয়েছে। অথচ ওই ক্যামেরা লাগানোর বিষয়ে আগাম কোনও খবরেই নেই বন দফতর বা পুলিশের কাছে। ঝালদা বন দফতরের রেঞ্জার বিশ্বজ্যোতি দে বলে, ‘‘ক্যামেরাটি চালু অবস্থায় ছিল। দেখে মনে হচ্ছে, ৩-৪দিন আগে সেটা লাগানো হয়েছিল। কিন্তু ওই ক্যামেরায় কোনও ছবি ধরা পড়েনি। এই ক্যামেরা বসানোর আগে আমাদের কাছেও কেউ অনুমতিও নেয়নি। উদ্ধারের পরেও এখনও পর্যন্ত ক্যামেরাটির কোনও দাবিদার যোগাযোগ করেনি। বন দফতরকে না জানিয়ে জঙ্গলে এ ভাবে ক্যামেরা বসানো অপরাধ।’’
এই প্রথম এমন ধরনের ঘটনায় চিন্তিত বন দফতরও। এক আধিকারিকের মতে, ‘‘পুরুলিয়া জেলায় প্যাঙ্গোলিন, ক্যামেলিয়নের পাশাপাশি হরিণ, শেয়ালের চামড়া পাচারচক্র ধরা পড়েছে। এমনকি এই জেলায় পাচারের আগে নীলগাইও উদ্ধার হয়েছে। যারা এই ক্যামেরা বসিয়েছিল তাদের উদেশ্য ভাল হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত বা অনুমতি নিত। এমনটা হতেই পারে অসৎ উদেশ্যে এই অঞ্চলের বন্যপ্রাণী সম্পর্কে খোঁজখবর নিতেই চোরাশিকারিরা ওই ক্যামেরা বসিয়েছিল।’’ তাঁর আরও দাবি ওই ক্যামেরাটি খুব কম দামের। অনলাইন মার্কেট থেকে তা কেনা বলেও তাঁর মত।