Bidyut Chakraborty

মুখ্যমন্ত্রীকে ‘কুরুচিকর ভাষা’, বিদ্যুতের বিরুদ্ধে থানায় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি

নিজের নির্ধারিত কার্যকাল শেষ হওয়ার ঠিক আগের দিন মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যে চিঠির ভাষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। তা নিয়েই এ বার পুলিশেও নালিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:২০
Share:

বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। — ফাইল ছবি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ‘কুরুচিকর মন্তব্য’ করার অভিযোগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের। অভিযোগকারী প্রলয় নায়েকের বক্তব্য, বিশ্বভারতীর প্যাডে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা কুরুচিকর এবং অত্যন্ত অপমানজনক। অভিযোগকারী জানিয়েছেন, তিনি হুগলির একটি কলেজের শিক্ষক এবং বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী। পাশাপাশি, তিনি বীরভূম জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদেরও সভাপতি। যদিও প্রশ্ন উঠছে, সরকারি চাকরিরত কেউ উপাচার্যের বিরুদ্ধে এ ভাবে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারেন কি না তা নিয়েই।

Advertisement

শান্তিনিকেতন থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগে প্রলয় লিখেছেন, গত ৭ নভেম্বর বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাডে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কুরুচিকর, অপমানজনক এবং শ্লেষাত্মক মন্তব্য করেছেন। তাকে প্ররোচনামূলক বলে অভিহিত করে প্রলয়ের দাবি, উপাচার্যের এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। বিশ্বভারতীর এক জন প্রাক্তনী হিসাবেও তিনি মনে করেন, ওই ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীকে সম্বোধন করায় তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) অপমান হয়েছে। বিষয়টি যে কোনও সময় বড়সড় অশান্তির কারণ হতে পারে বলেও অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছেন প্রলয়। সব শেষে পুলিশকে বিদ্যুতের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন নিজেকে কলেজ শিক্ষক এবং বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী বলে দাবি করা প্রলয়।

শান্তিনিকেতন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের তকমা পাওয়ার পর থেকেই চাপানউতর চলছিল। তার পর, ঐতিহ্য-ফলকের বয়ান ঘিরে বিশ্বভারতীয় উপাচার্য সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ ওঠে, স্বীকৃতির যাবতীয় কৃতিত্ব দখল করতে চান উপাচার্য বিদ্যুৎ। তাই, বিশ্বভারতীর উপাসনাগৃহ, ছাতিমতলা এবং রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়ণের সামনে সাদা পাথরের ফলকে আচার্য নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি রয়েছে কেবল তাঁরই নাম। এমনকি, বাদ পড়েছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও! তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী একে রবি ঠাকুরের অপমান হিসাবে চিহ্নিত করে দলকে রবীন্দ্রনাথের ছবি বুকে ঝুলিয়ে আন্দোলনে নামতে বলেন। সেই মতো কবিগুরু মার্কেটে মঞ্চ বেঁধে চলে তৃণমূলের প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচি। যে মঞ্চ থেকে তাঁর প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশকে পাল্টা অভিযোগে নালিশ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ। এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি রাস্তা ফেরত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে চিঠির ভাষা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন অনেকেই।

Advertisement

বুধবারই বিশ্বভারতীতে উপাচার্য পদে বিদ্যুতের কর্মজীবনের শেষ দিন। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে, মঙ্গলবার, বিদ্যুৎ চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে। যে চিঠির উদ্দেশ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। সেই চিঠির ভাষাতেই আপত্তি জানিয়ে এ বার পুলিশের কাছে গেলেন প্রলয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রলয় বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী। পাশাপাশি, তিনি বীরভূম জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি। একাধিক বার তাঁকে তৃণমূলের মঞ্চেও দেখা গিয়েছে। স্বভাবতই, সরকারি পদাধিকারীর এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে থানায় যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement