কাগজের ব্যাগ তৈরি করছেন মহিলারা। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী।
পোড়ামাটির সামগ্রী কিংবা বিষ্ণুপুরের বালুচরি পর্যটকদের মন কাড়ে ঠিকই, তবে এ বার কাগজের ব্যাগ কিনে উচ্ছ্বসিত পর্যটকেরা।
সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির হাটের কাছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ‘সৃষ্টিশ্রী’ বিপণনী থেকে কাগজের ব্যাগ কেনেন বীরভূমের শিক্ষিকা আল্পনা মুখোপাধ্যায়, উমা সেন, বাবলি চক্রবর্তীরা। তাঁরা বলেন, ‘‘পুরনো খবরের কাগজ দিয়ে তৈরি এ রকম ব্যাগ আগে দেখিনি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা সত্যি স্বনির্ভর।”
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে এই বিপণীর ‘ভার্চুয়াল’ উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিন তিনিও ৪০০ টাকা দিয়ে খবরের কাগজের ব্যাগ কিনেছিলেন, জানাচ্ছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা।পরিবেশ বান্ধব এই ব্যাগগুলি আকার অনুযায়ী ৬০-৪০০ টাকার মধ্যে রয়েছে। এতে এক-পাঁচ কিলোগ্রাম পর্যন্ত সামগ্রী বহন করা যায়। সপ্তাহে দু’দিন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ব্যাগ তৈরি ও বিক্রি করছেন ওই বিপণনী কেন্দ্রে।
পাতলা প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ। বিকল্প হিসেবে প্রশাসন চাইছে, বাজার দখল করুক পুরনো খবরের কাগজের তৈরি এই ব্যাগ। তবে বিভিন্ন সরকারি হস্তশিল্পের মেলা আর বিপণনী কেন্দ্রের মাধ্যমেই কি বাজার দখল করতে পারবে এই ব্যাগ? প্রশ্ন পরিবেশপ্রেমীদের।
তবে বাজার পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বিষ্ণুপুরের বিডিও সোমশঙ্কর মণ্ডল। তিনি বলেন, “বনমালীপুরে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রথম কাগজের ব্যাগ তৈরি করেছিল। এখন তাঁরা অনেকখানি প্রশিক্ষিত। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মেলায় তাঁরা ব্যাগ বিক্রি ও প্রদর্শনী করছেন। আর্থিকভাবে তাঁরা যাতে এগিয়ে যেতে পারেন ও উৎপাদিত সামগ্রী বেশি পরিমাণে বিক্রি করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুরের প্রায় ৪০০ মহিলা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এই ব্যাগ তৈরির সঙ্গে যুক্ত। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা জুনা চক্রবর্তী, ঝুমা খাঁ, উমা বাগদি বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসন বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করছে। জেলা প্রশাসন ‘সৃষ্টিশ্রী’ বিপণনী কেন্দ্র গড়ে দিয়েছে। তবে আমরা এই ব্যবসাকে সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। এ বিষয়ে আরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে ভাল হয়।”