বান্দোয়ান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আহত পড়ুয়াদের চিকিৎসা। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।
রাস্তায় স্কুলবাস উল্টে আহত হয়েছে একটি বেসরকারি স্কুলের বেশ কয়েক জন পড়ুয়া। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ বান্দোয়ান-দুয়ারসিনি রাস্তায় বান্দোয়ানের পাটকিতা গ্রামের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসটি ৩১ জন পড়ুয়া নিয়ে ভালোপাহাড়ের কাছে ওই স্কুলে যাচ্ছিল। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে সেটি উল্টে যায়। কম-বেশি আহত হয় সকলেই। তাদের কারও হাত-পা কেটেছে। কেউ মাথায় চোট পেয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়েরা তাদের প্রথমে বান্দোয়ান ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। হাসপাতাল সূত্রে খবর, কয়েক জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চালক-সহ ১১ জনকে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই আপাতত তাঁরা চিকিৎসাধীন।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, বাসটির বয়স প্রায় ১২ বছর। তার ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নেই। করানো নেই বিমাও। বেশ কয়েক বছর বাসটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়নি। পুলিশ জানায়, বাসটি আটক করা হয়েছে। মামলা রুজু হয়েছে চালক ও বাসের মালিকের নামে। স্কুল এবং বাসের মালিক কমল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাদের পাশে রয়েছি।’’
তবে বাস নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ বা বাসে যান্ত্রিক গোলযোগ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়েছেন তিনি। বাসের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে আর ফোন ধরেননি। আহত পড়ুয়াদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি প্রতিমা সরেন, বিডিও (বান্দোয়ান) কাসিফ সাবির এবং মহকুমাশাসক (মানবাজার) অনুজপ্রতাপ সিংহ। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার কারণ, বাসের হাল— সবই খতিয়ে দেখা হবে।’’
দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম ঘোলহুড়া গ্রামের ছাত্র বিশ্বজিৎ বাস্কের বাবা বাবলু বাস্কে বলেন, ‘‘ছেলেকে বাসে তুলে কাজে গিয়েছিলাম। খবর পেয়েই হাসপাতালে এসেছি। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না।’’ আর এক পড়ুয়ার অভিভাবক দীপক মান্ডি বলেন, ‘‘ছেলে আহত হয়েছে। তবে আঘাত তেমন গুরুতর নয়।’’
পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একাংশের দাবি, প্রথমে যে বাসে পড়ুয়ারা উঠেছিল, সেটি ডাঙা গ্রামের কাছে খারাপ হয়ে যায়। পরে, অন্য একটি বাসে তোলা হয় তাদের। সে বাসটি পুরনো হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, অভিযোগ অভিভাবকদের।