দুবরাজপুরে গড়গড়ার কাছে, জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনার পরে ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় সড়কে ফের দুর্ঘটনায় মৃত্যু মোটরবাইক চালকের। আনাজ বিক্রি শেষে বাজার থেকে বাইকে বাড়ি ফেরার পথে এক চাষিকে পিষে দিল দ্রুত গতির ছাই বহনকারী ট্রেলার। সেই অবস্থাতেই অন্তত ১৫০-২০০ ফুট ওই চাষিকে টেনে নিয়ে যায় ট্রেলার।
শুক্রবার সকাল ন'টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে, দুবরাজপুর থানা এলাকার গড়গড়া মোড় ও শাল সেতুর মাঝামাঝি জায়গায়, রানিগঞ্জ- মোরগ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম হারাধন পাল (৫৬)। বাড়ি খয়রাশলের পাইগড়া গ্রামে। চোখের সামনে ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনা দেখার পরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকার মানুষ। ঘটনার জন্য পরোক্ষে পুলিশের যান নিয়ন্ত্রণকে দায়ী করতে থাকেন তাঁরা। দীর্ঘক্ষণ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়কে শাল নদীর উপরে সেতুটি খয়রাশোল ও দুবরাজপুর থানা এলাকাকে ভাগ করেছে। খয়রাশোলের পাইগড়া গ্রামের আনাজ চাষি হারাধন খেতের আনাজ নিয়ে দুবরাজপুর বাজারে আসতেন প্রায়ই। এ দিনও সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ দুবরাজপুরে এসেছিলেন। দ্রুত আনাজ বিক্রি করে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় পিছন থেকে ছাইবহনকারী ভারী গাড়িটি তাঁকে ধাক্কা মারে। বাইক রাস্তায় ছিটকে পড়লেও অন্তত ১৫০-২০০ ফুট হারাধনকে টেনে নিয়ে যায় ওই ভারী গাড়ি। তাতে কার্যত ছিন্নভিন্ন হয়ে রাস্তার সঙ্গে লেপ্টে যায় তাঁর দেহ।
ঘটনার পরে পরেই ঘাতক গাড়িটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে, পুলিশ ধাওয়া করে খয়রাশোলের ভীমগড়ে গাড়িকে ধরে ফেলে। চালক পলাতক। মর্মান্তিক ঘটনার পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন এলাকার মানুষজন। স্থানীয় বাসিন্দা ও শাল নদীর ও-পারের পাইগড়া গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুবরাজপুর শহরে যানজট আটকাতে এই রাস্তা ধারে সিউড়িমুখী সমস্ত পণ্যবাহী ট্রাক-ডাম্পারকে রাস্তার এক দিকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখে পুলিশ। তার ফলে জাতীয় সড়ক সঙ্কীর্ণ হয়ে ওঠো। দুর্ঘটনার মূল কারণ সেটাই। এলাকাবাসীর দাবি, এ দিন সকালেও এক দিকে সার দিয়ে দাড়িয়ে ছিল ভারী গাড়ি। বাঁ দিক দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় পিছন থেকে ছাই বহনকারী ট্রেলার দ্রুতবেগে চলে আসায় সরার সুযোগ পাননি হারাধন।
তবে পুলিশের দাবি, যেহেতু জাতীয় সড়ক ঘিঞ্জি দুবরাজপুর শহরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তাই শহরের দু’দিক থেকে পালা করে ভারী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ না-করলে শহরের মধ্যে দিয়ে চলাচল করাই সম্ভব নয়। সকলের অসুবিধার কথা চিন্তা করে এক দিকে গাড়ির সংখ্যা বেশি হলে, সেই সারি ছেড়ে দেওয়া হয়। ভবিষ্যতেও সেটা দেখা হবে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এ দিনের দুর্ঘটনা ঘটেছে ছাই বহনকারী গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে। গাড়িটি আটক করা হয়েছে। চালকের বিরুদ্ধে মামলা হবে।’’