ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
দুধ বিক্রি করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া এক যুবককে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। রবিবার সকালে পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে শিমুলিয়া বাইপাস এলাকায় দেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম রাহুল যাদব (২৪)। তিনি পুরুলিয়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুলমি নডিহার বাসিন্দা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতের মাথার পিছনে আঘাতের ক্ষত রয়েছে। নিহতের বাবা উপেন্দ্র যাদব ঘটনাস্থলের কাছাকাছি এলাকার এক দম্পতির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় আপাতত দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজে ওই যুবকের দেহের ময়না তদন্ত করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় সাইকেলে দুধ বিক্রি করতে বেরিয়েছিলেন রাহুল। তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের দাবি, তাঁরা ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু রাত প্রায় পৌনে ৯টা নাগাদ তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় ভাবে সন্ধান চালিয়েও রাতে তাঁরা খোঁজ পাননি। রবিবার সকালে নব নির্মিত ধানবাদ-জামশেদপুর জাতীয় সড়কের বাইপাসে, হনুমানপল্লি এলাকায় ওই যুবকের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান পরিবারের লোকজন। ঘটনাস্থলে আসে টামনা থানার পুলিশও। স্থানীয়দের দাবি, যেখানে দেহ পড়েছিল, তার কিছুটা দূরে তাঁর সাইকেলটিও দাঁড় করানো অবস্থায় ছিল। দুধ বিক্রির পাত্রগুলিও ছিল।
এ দিন দেহ উদ্ধারের পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নিহত যুবকের পরিবারের সদস্যেরা। নিহত যুবকের বাবা উপেন্দ্র যাদব। তিনি বলেন, ‘‘যেখানে ছেলের দেহ পড়েছিল, তার কাছেই একটি বাড়িতে সে রোজ দুধ দিতে আসত। ওই বাড়ির মালিক আমার ছেলেকে মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে হুমকি দিচ্ছিল। তারাই আমার ছেলেকে খুন করেছে।’’
ঘটনাস্থলে যান পুরুলিয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি মৌসুমী ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘রাহুল খুব নিরীহ প্রকৃতির ছেলে। আমার বাড়িতেও তাঁর যাতায়াত ছিল। কী ভাবে এমন কাণ্ড ঘটল? আমি পুলিশ প্রশাসনকে আরও কড়া হতে আবেদন করছি।’’ তাঁর দাবি, অন্যত্র খুন করে দেহটি সেখানে টেনে আনা হয়েছে। কারণ রাস্তায় রক্তের দাগ লেগে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ির দুই সদস্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে চেষ্টা করেও ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।