মেধাবী ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, (ইনসেটে ) সায়ন কর্মকার। —নিজস্ব চিত্র।
ডাক্তারিতে পড়ার সর্বভারতীয় পরীক্ষায় ভাল ফল হয়েছিল। ইচ্ছা ছিল চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু তার আগেই ঘর থেকে মিলল ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ার পাঁচাল গ্রামে। দরজা ভেঙে সায়ন কর্মকার নামে ওই ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে সোনামুখী থানার পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, আত্মহত্যা করেছেন ওই তরুণ। পরিবারের ধারণা, কোনও মারণ গেমে আসক্ত হয়েই এই ঘটনা ঘটিয়েছে্ন সায়ন।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবি হিসাবে পরিচিত ছিলেন সায়ন। সম্প্রতি ডাক্তারিতে ভর্তির সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষায় ৩৬ হাজার ৫১১ র্যাঙ্ক করেছিলেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ রাজ্যের কোন মেডিক্যাল কলেজে পড়তে চান তা জানিয়ে মঙ্গলবারই আবেদন করার কথা ছিল সায়নের। কিন্তু তার আগেই ঘর থেকে উদ্ধার হল তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ। মঙ্গলবার অনেক বেলা পর্যন্ত সায়নের ঘরের দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। ডাকাডাকির পরও সাড়া না মেলায় প্রতিবেশীদের ডাকা হয়। প্রতিবেশীরা এসে ঘরের দরজা ভেঙে দেখতে পান, সিলিং ফ্যানের হুকে কাপড়ের ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন সায়ন। পুলিশ সায়নের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
সায়নের বাবা মঙ্গলদাস কর্মকারের কথায়, ‘‘দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় সায়নের হাতে কাটা দাগ দেখে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। সেই সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যেত। সায়নের এখন পড়াশোনার চাপ না থাকায় ও সারা দিনই মোবাইল ফোন নিয়ে কাটাত। আমাদের সন্দেহ, সায়ন মোবাইলের মাধ্যমে মারণ কোনও গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছিল।’’ সায়নের প্রতিবেশী সুব্রত চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘মারণ কোনও গেমে আসক্তি ছাড়া এই আত্মহত্যার পিছনে আর কোনও কারণ থাকতে পারে না।’’ পুলিশ সায়নের মোবাইল ফোনটি পরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছে। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।