লটারির টিকিট হাতে শেখ এহসান।
সাইকেলে চড়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ফেরি করতেন। দৈনিক আয় মেরেকেটে শ’দুয়েক। এক ঝটকায় ঘুরে গেল সেই দিন আনা দিন খাওয়া জীবনের চাকাটা। সোমবার সকালে লটারি কেটেছিলেন বীরভূমের দুবরাজপুরের বাসিন্দা শেখ এহসান। দুপুরে ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায় এক কোটি টাকা জিতেছেন এহসান।
দুবরাজপুরের ইসলামপুরে বাড়ি এহসানের। বাড়ি বলতে মাটির দেওয়াল, খড়ের চাল। কোনওক্রমে মাথাগোঁজার ঠাঁই। সেখানেই বাবা, মা, স্ত্রী, দুই সন্তান-সহ জনা দশেকের পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। পেশায় ফেরিওয়ালা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্লাস্টিকের নানা জিনিসপত্র ফেরি করেন। কখনও হরেক মাল ১০ টাকায়, কখনও বা ২০ টাকায় বিক্রি করেন। ১০-২০ টাকার এই বেচাকেনায় সর্বাধিক দৈনিক আয় কখনও কখনও দু’শো টাকাও হয়ে যায় এহসানের। জীবনের অভিমুখ উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিতে তাই নিয়মিত লটারি কাটতেন তিনি। সোমবার সেই চেষ্টায় সাফল্য এসেছে। ৩০ টাকা দিয়ে কেনা লটারিতে ১ কোটি টাকা জিতেছেন এহসান।
পাশের বাড়ির ছেলে কোটি টাকা জিতেছে— খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় জমেছে এহসানের বাড়িতে। বাড়িতে এমন ভিড় আগে কখনও দেখেননি এহসান বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পরিস্থিতি এমন হয় যে দুবরাজপুর থানার পুলিশের কাছেও সাহায্য চান এহসান। সোমবার দুপুর থেকে জীবনে যে আচমকা বদল এসেছে তা টের পাচ্ছেন তিনি। এহসান বলছেন, ‘‘আমি প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ফেরি করি। আজ ৩০ টাকার টিকিট কেটেছিলাম। রেজাল্ট বার হলে দেখলাম এক কোটি টাকা পেয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই টাকা দিয়ে ঘরবাড়ি করব। ছেলেদের পড়াশোনার জন্য খরচ খরব।’’
এহসানের মা নুরেমা বিবি বলছেন, ‘‘ছেলে এক কোটি টাকা পেয়েছে। আমি খুব খুশি। অনেকে বাড়িতে আসছেন। আমরা গরিব। বাড়িতে কখনও এত লোক দেখিনি। এখন সকলে আসছে। আমার স্বপ্ন, ছেলে বাড়ি করবে। নাতিনাতনিদের পড়াশোনার জন্য খরচ করবে। আর আমাদের দেখাশোনা করবে। ছেলেকে শিক্ষা দিতে পারিনি। আমি চাই ছেলে যেন দুধেভাতে থাকে।’’