—প্রতীকী চিত্র।
পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে অপুষ্টিতে ভোগা এক শিশুর মৃত্যুর পরে তার পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলল। ভোটের মুখে এই ঘটনা। তরজাও শুরু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে শনিবার জানান পুরুলিয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার শিশু মৃত্যুর পরেই স্বাস্থ্য দফতরের দলকে বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বামুনডিহা পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তাদের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনা গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’’
মৃত দশ মাসের শিশু তুফান ওঁরাং-এর বাড়ি বরাবাজারের হেরবনা গ্রামে। তার বাবা পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় ওঁরাং জানান, জন্মের সময় ছেলে সুস্থ-সবল থাকলেও ছ’মাসের পর থেকে রোগা হতে শুরু করে।চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ও খাবার দেওয়া হত। তাও সমস্যা কাটেনি।তাঁর কথায়, ‘‘ছেলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার বামুনডিহা পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ওকে ভর্তি করি। শুক্রবার পেট খারাপ করায় বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই সেখানে মারা গেল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে আগেই ছেলেকে বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হলে, এই পরিণতি হত না। চিকিৎসার গাফিলতির কারণেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।’’ যদিও এ দিন পর্যন্ত তিনি লিখিত অভিযোগ করেননি।
বরাবাজারের ব্লক মেডিক্যাল স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) শুভাশিস মুদির দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিশুটি ঠিকই ছিল। শুক্রবার অবস্থার অবনতি হওয়ায় পুরুলিয়া মেডিক্যালে নিয়ে যেতে বলা হয় পরিবারকে। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু তাঁরা বরাবাজার ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সাধ্যমতো চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি।’’ তিনি জানান, পারিবারিক অবস্থা তুলনায় ভাল হওয়া সত্ত্বেও শিশুটি কেন অপুষ্টির শিকার, তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনীতির চাপানউতোর। বোরো থানার বাসিন্দা, বিজেপির এসটি মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পারশি মুর্মু বলেন, ‘‘অপুষ্টির শিকার শিশুরা বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতাদের পকেট ভরছে।’’ যদিও জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সুমিতা সিংহ মল্লের দাবি, ‘‘কী কারণে এমনটা ঘটল, স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত করে দেখছে। বিজেপি রাজনীতি করার জন্য মৃত্যু খুঁজে বেরাচ্ছে। আমাদের আমলে শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমেছে।’’