এ বার হাতেনাতে গ্রেফতার ৯ জন

মদের দোকানে হামলা

শনিবার বিকেলে পুরুলিয়ার জয়পুর থানার সেলানি রোডের ধারে ওই মদের দোকানগুলিতে ভাঙচুর চালান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পুরুলিয়া ধানবাদ জাতীয় সড়ক ও চাষ মোড়-তুলিন রাজ্য সড়কের মোড়ে জগদীশচন্দ্র মণ্ডলের একটি মদের দোকান ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০২:১৩
Share:

প্রতীকী চিত্র।

এক দিনের ব্যবধানে ফের দু’টি মদের দোকানে ভাঙচুর হল জেলায়। তবে এ বারে হাতেনাতে ন’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

শনিবার বিকেলে পুরুলিয়ার জয়পুর থানার সেলানি রোডের ধারে ওই মদের দোকানগুলিতে ভাঙচুর চালান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পুরুলিয়া ধানবাদ জাতীয় সড়ক ও চাষ মোড়-তুলিন রাজ্য সড়কের মোড়ে জগদীশচন্দ্র মণ্ডলের একটি মদের দোকান ছিল। জাতীয় এবং রাজ্য সড়কের নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে কোনও মদের দোকান রাখা যাবে না বলে কিছু দিন আগে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই ওই দোকানটি সরিয়ে নিয়ে আসা হয় পাটটাড় এলাকার বড়গ্রাম-সেলানি রাস্তার পাশে।

ওই জায়গাটি জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় সওয়া এক কিলোমিটার দূরে। স্থানান্তরের পরে গত ১৬ জুন থেকে দোকানে বিক্রিবাটা শুরু হয়। একই ভাবে জাতীয় সড়কের ধার থেকে সুরেশপ্রসাদ সাউ নামে এক ব্যবসায়ী দেশি মদের দোকান উঠিয়ে নিয়ে আসেন। সেটি জগদীশবাবুর দোকানের কিছুটা দূরে চালু হয়।

Advertisement

জগদীশবাবু জানান, শনিবার দুপুরে তাঁরা দোকান বন্ধ করে চাষমোড়ে খেতে গিয়েছিলেন। তখনই দেখতে পান মদের দোকান করা যাবে না— এই দাবিতে একটি মিছিল যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর আসে দোকানে ভাঙচুর হচ্ছে। তক্ষুণি থানায় ফোন করি।’’

জগদীশবাবুর দাবি, তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, দোকানের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েছেন প্রায় ষাট-সত্তর জন। দামি মদের বোতল বাইরে নিয়ে এসে আছড়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ভাঙচুর চলছিল সুরেশবাবুর দোকানেও।

চাষমোড় এলাকাটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় পুলিশের টহলদারি ভ্যান প্রায়ই সেখান দিয়ে যাতায়াত করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ চলে আসে। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই বেপরোয়া ভাবে ভাঙচুর চলে। জয়পুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময়ে ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে চার জন মহিলা-সহ মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

পরে জগদীশবাবু থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে সেই অভিযোগে নির্দিষ্ট ভাবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। ওই ন’জনের বিরুদ্ধে অনধিকার প্রবেশ, সম্পত্তি নষ্ট করা, সরকারি কর্মীকে কর্তব্যে বাধা দেওয়া, সরকার স্বীকৃত পরিষেবায় বাধা দেওয়া প্রভৃতি অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার ধৃতদের পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। সেখানে বিচারক ধৃত চার জন মহিলার জামিন মঞ্জুর করেন। বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।

এলাকায় মদের দোকান করা যাবে না, এই দাবিতে শুক্রবার পুরুলিয়া শহরে জাতীয় সড়কের ধার থেকে স্থানান্তরিত একটি দোকানে ভাঙচুর চালান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। শহরের ভাটবাঁধ মোড়ে ওই দিনই দোকানটি চালু হয়েছিল। মোড়টি রাঁচি রোড-জামশেদপুর রোডের বাইপাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রমীলা বাহিনীর তাণ্ডবে ওই রাস্তায় যানবাহন আটকে যায়। তবে ওই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে জেলার অনেক মদের দোকান জাতীয় এবং রাজ্য সড়কের ধার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেই দোকানগুলিই জেলার অন্য অনেক জায়গায় নতুন করে চালু হচ্ছে। এই জন্য নতুন করে মালিকদের আবগারি দফতরের অনুমোদন নিতে হচ্ছে।

জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দোকানগুলির জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বেছে আবগারি দফতরে আবেদন করেন মালিকেরা। দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা সরেজমিন দেখে সেই অনুমোদন মঞ্জুর করেন। আবগারি দফতরের জেলা আধিকারিক সিদ্ধার্থ সেন জানান, ওই দোকানগুলি সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই চালু হয়েছে। পরিদর্শনের সময়ে এলাকার বাসিন্দারা আপত্তি জানালে তখনই বিষয়টি খতিয়ে দেখা যেতে পারত। কিন্তু সেই সময়ে কেউ সামনে আসেননি বলে দফতরের কর্মী ও আধিকারিকদের দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement