ট্রাকটর উধাও ঘটনায় ধৃত ছয়। প্রতীকী চিত্র।
ট্রাক্টর ভাড়া দিলে মাসে মাসে মিলবে মোটা টাকা। ছ’মাসের অগ্রিম ভাড়া দিয়েই নেওয়া হবে ট্রাক্টর। এমনই টোপ দিয়ে পুরুলিয়া জেলায় বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ভাড়ায় নেওয়া ট্রাক্টর মাসখানেক পরে উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল।
হুড়ার তিলগোড়া গ্রামের বাসিন্দা নরেনচন্দ্র মাহাতো কাশীপুরের এক ব্যক্তিকে তাঁর ভাড়া দেওয়া ট্রাক্টরের হদিশ পাচ্ছেন না বলে রবিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। তবে পুলিশের দাবি, শুধু ওই ব্যক্তিরই নয়, ইতিমধ্যে জেলার প্রায় ৩০টি ট্রাক্টর একই ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে বলে তারা প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে।
পুরুলিয়ার জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ট্রাক্টর উধাও করা নিয়ে মামলা রুজু হয়েছে। ছ’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ট্রাক্টরের ১৪টি ট্রলি পুলিশ উদ্ধার করেছে। একটি ট্রাক্টরেরও হদিশ মিলেছে। সেটির মালিকানা নিয়ে খোঁজ চলছে।’’ তিনি জানান, সন্দেহভাজনদের মধ্যে কেউ অপরাধে জড়িত মনে হলে, তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে।
হুড়ার তিলগোড়া গ্রামের বাসিন্দা নরেনচন্দ্র মাহাতোর দাবি, মাসে এগারো হাজার টাকা ভাড়ায় কাশীপুরের এক ব্যক্তি তাঁর ট্রাক্টরটি নিয়েছিলেন। এখন খোঁজ করতে গেলে ওই ব্যক্তি ট্রাক্টরটি অন্য এক জনকে ভাড়ায় দিয়েছেন বলে তাঁকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোথায় ট্রাক্টর রয়েছে, তা তিনি জানাতে পারছেন না।
কাশীপুরের বাসিন্দা অপূর্ব চেলের কথায়, ‘‘নভেম্বর মাসে এক পরিচিত ব্যক্তি আমাকে জানান, বাইরে কাজের জন্য ট্রাক্টর ভাড়ায় নেবেন। প্রতি মাসে আট হাজার টাকা ভাড়া। অগ্রিম ভাড়া বাবদ ৪০ হাজার টাকার চেক দেন। মাসে ১২ হাজার টাকা ভাড়ার শর্তে কয়েকমাস পরে আরও একটি ট্রাক্টর আর এক জনকে দিই। এখন খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারছি, ট্রাক্টর দু’টি ওই ব্যক্তিদের কাছে নেই।’’
কাশীপুরের চুণা গ্রামের বাসিন্দা রাজীব মাহাতো জানান, চলতি মাসে তিনি ট্রাক্টর ভাড়া দেন। শুক্রবার খবর পান, ওই ট্রাক্টরের ট্রলি পুরুলিয়ার একটি গাড়ির শো-রুমে কেউ বিক্রি করে দিয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁকে আমি ট্রাক্টরটি লিজে দিয়েছিলাম তিনি অন্য এক জনকে সেটি ভাড়ায় দিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন। ট্রাক্টরটা কোথায় গেল বুঝতে পারছি না।’’
কাশীপুরের বাসিন্দা অশেষ মোদকের দাবি, ‘‘আমার ভাড়া দেওয়া ট্রাক্টরে জিপিএস লোকেটর লাগানো রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখি, সেটি উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে রয়েছে। অথচ সেটি মেজিয়া বা দুমদুমিতে কাজের জন্য নেওয়া হয়েছিল।’’ পুলিশের অনুমান, বড় কোনও চক্র রয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।