পুরুলিয়া আদালতে তোলা হচ্ছে অভিযুক্তদের। নিজস্ব চিত্র।
গাড়িতে তুলে পাচারের সময়ে এক কিশোরীকে উদ্ধারের দাবি করল পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে পাচারের চেষ্টার অভিযোগে কিশোরীর এক আত্মীয়-সহ আন্তঃরাজ্য নারী পাচার চক্রে যুক্ত সন্দেহে ছয় যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে চার জন জন হরিয়ানা ও এক জন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। রবিবার ধৃতদের পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের দশ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাবাজার থানা এলাকার ওই কিশোরীর ধৃত আত্মীয়ের নাম ভাস্কর মাহাতো। বাকি ধৃত বিজয় সিং, পবন কুমার, সুদীপ কুমার, শিব সিং হরিয়ানার পালওয়াল জেলার বাসিন্দা। অপর ধৃত হরপাল সিং উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা আন্তঃরাজ্য নারী পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। জেরায় তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ স্বীকার করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। শনিবার রাতে জেলা চাইল্ডলাইনের পক্ষ থেকে দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওদের গ্রেফতার করা হয়।
পুরুলিয়া জেলা চাইল্ডলাইনের কো-অর্ডিনেটর অশোক মাহাতো বলেন, ‘‘শনিবার চাইল্ডলাইনের হেল্পলাইনে (১০৯৮) ফোন আসে। জানানো হয়, বরাবাজারের একটি গ্রাম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া এক নাবালিকাকে বিয়ে দেওয়ার নাম করে ভিন্ রাজ্যের যুবকদের কাছে বিক্রি করার চেষ্টা চলছে। খবর পেয়ে আমরা বরাবাজার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ওই গ্রামে রওনা দিই। কিশোরীর গ্রাম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একটি মুরগি খামারের কাছে ছয় যুবক গল্প করছিল। পাশে ছিল ওই কিশোরী। তাদের সঙ্গে হরিয়ানার নম্বর দেওয়া একটি গাড়ি রাখা ছিল। যুবকদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ তাদের ঘিরে ধরে। পরে ওই কিশোরী আমাদের কাছে অভিযোগ করে, তার আত্মীয় ভাস্কর মাহাতো ধান কাটার নাম করে এখানে নিয়ে এসেছিল। পরে বুঝতে পারে, ওই যুবকদের হাতে তুলে দেওয়ার বিনিময়ে ভাস্কর টাকা পেয়েছে।’’ পুলিশ অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, ভাস্করের পকেট থেকে সাড়ে ৪১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে কিশোরীর দিদির লকডাউনের সময়ে হরিয়ানার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়। যদিও বিয়ের পর থেকে তাঁর সঙ্গে বাড়ির যোগাযোগ নেই। এই ঘটনায় কিশোরীর বাবার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরা করে পাচার চক্র সম্পর্কে আরও সূত্র মেলার সম্ভাবনা রয়েছে।