—নিজস্ব চিত্র।
দেড় মাস যেতে না যেতেই ফের বাঁকুড়ায় ঢুকে পড়ল হাতির একটি বড় দল। সোমবার ভোরে পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা টপকে ৫২টি হাতির একটি দল বিষ্ণুপুর হয়ে ঢুকে পড়ে জয়পুর ব্লকের আধকাটা জঙ্গলে। আমন ও রবি ফসলের ভরা মরসুমে জেলায় হাতির দলের হানায় আতঙ্কিত চাষিরা।
পুজোর ঠিক আগে বাঁকুড়া থেকে বিদায় নিয়েছিল হাতির দল। কিন্তু মাস দেড়েক যেতে না যেতেই বন দফতরের চিন্তা বাড়িয়ে সেই দল ফিরে এল বাঁকুড়ায়। বিষ্ণুপুরের জঙ্গল দিয়ে প্রবেশ করে হাতির দল সোজা হাজির হয় জয়পুর ব্লকের আধকাটা জঙ্গলে। বন দফতরের পর্যবেক্ষণ, যে ভাবে হাতির দলটি এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে সোমবার রাতেই মাচানতলার জঙ্গল অতিক্রম করে দারকেশ্বর নদের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে। এ দিকে হাতির দল এলাকায় প্রবেশ করতেই বন দফতরের তরফে জঙ্গল লাগোয়া এলাকাগুলিতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জঙ্গল লাগোয়া প্রতিটি এলাকায় বন দফতরের তরফে মাইক প্রচার করে সতর্ক করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। হাতির দলের গতিবিধির উপর কড়া নজরদারি রেখে প্রতি মূহুর্তে বন দফতরে সেই খবর পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন কর্মীদের।
বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের এডিএফও বীরেনকুমার শর্মা বলেন, ‘‘যে ৫২টি হাতির দল জয়পুর জঙ্গলে প্রবেশ করেছে, তার মধ্যে আটটি শাবক রয়েছে। গ্রীষ্মকালে বা বছরের অন্যান্য সময় যে ভাবে খুব কাছ থেকে হাতির দলের উপর নজর রাখা সম্ভব হয়, কুয়াশার কারণে শীতকালে ততটা কাছ থেকে নজরদারি করা যায় না। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের সকাল ও সন্ধ্যার সময় জঙ্গল এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে।’’
এ দিকে বাঁকুড়ার বহু এলাকায় এখনও আমন ধান পুরোপুরি কাটা হয়নি। বিস্তীর্ণ এলাকায় মাঠে রয়েছে আলু। এই পরিস্থিতিতে হাতির দল বাঁকুড়ায় ফিরে প্রমাদ গুনছেন জেলার চাষিরা। জয়পুরের আলু চাষি সকানাথ লোহার বলেন, ‘‘মাঠের মাঝেই ধান গাদা করে রেখে জমিতে আলু চাষ করেছি। মাঠ এখন ঢাকা রয়েছে আলু গাছে। এই পরিস্থিতিতে হাতির দল জঙ্গল ছেড়ে জমিতে নামলেই সব শেষ হয়ে যাবে।’’