এ বার রামপুরহাটের তিন বিজেপি এবং এক সিপিএম কাউন্সিলরকে ঘরে তুলল তৃণমূল।
শনিবার পুরসভার একটি কক্ষে ওই চার বিরোধী কাউন্সিলরের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতৃত্ব। ওই অনুষ্ঠানেই গঠন করা হল রামপুরহাট পুরসভার আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত পুরকর্মীদের সংগঠনও। এ দিনই ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে সাড়ে তিন কিলোগ্রাম ওজনের একটি রুপোর তরবারি তুলে দেওয়া হয় অনুব্রতর হাতে। সংবর্ধনা দেওয়া হয় দুই মন্ত্রী, তিন বিধায়ক ও অন্যান্য নেতৃত্বকেও। সংগঠনের সভাপতি ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সম্প্রতি পুর দফতর পুরসভার ৫০ জন কর্মীকে সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি দিয়েছে। যাঁদের অবদানে ওই কর্মীদের সরকারি বেতন ক্রম চালু হয়েছে, মূলত তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়ার জন্যই এ দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে যে চার বিরোধী কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিলেন, তাঁরা হলেন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর প্রজাপতি ধীবর, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর পারমিতা চক্রবর্তী, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর ভগীরথ দাস এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর সাগরিকা মাল। ওই দল বদলের জেরে ১৮ আসনের রামপুরহাট পুরসভায় কেবল চার জন বিরোধী কাউন্সিলর রইলেন। কংগ্রেসের দু’জন এবং বিজেপি ও সিপিএমের ১ জন কাউন্সিলর। কেন এই দল বদল? চার কাউন্সিলরেই বক্তব্য, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থেই এই দলবদল।” বিরোধী কাউন্সিলরের পদে থেকে কি উন্নয়ন করা যাচ্ছিল না? সাগরিকাদেবীর দাবি, ‘‘না, করতে পারছিলাম না।’’
এ দিকে, দল বদলের জেরে সংগঠনের কোনও ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেছে বিজেপি এবং সিপিএম, উভয় নেতৃত্বই। দু’দলের নেতাদেরই দাবি, ওই কাউন্সিলরেরা আদতে এলাকার মানুষের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শুভাশিস চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা আজ তৃণমূলে গেলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূলকে হারিয়ে কাউন্সিলর হয়েছিলেন। সুতরাং তাঁরা নিজেদের স্বার্থে দলত্যাগ করলেও এলাকার মানুষ তাঁদের সঙ্গে নেই।’’ শুভাশিসবাবুর চ্যালেঞ্জ, ক্ষমতা থাকলে তৃণমূল ওই কাউন্সিলরদের নিজেদের ওয়ার্ড থেকে জিতিয়ে আনুক। একই বক্তব্য পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিকেরও। তিনি আরও বলেন, ‘‘উন্নয়নের টাকা না পাওয়ার হতাশায় যাঁরা তৃণমূলে যোগ দিলেন, তাঁরা আদতে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই বিকিয়ে দিলেন।’’