প্রতীকী ছবি।
গত এক মাসে পুরুলিয়ায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে কমবেশি ৩০ জনের। এর আগে এই জেলায় এক মাসে বজ্রপাতে এত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল কি না, সেই তথ্য প্রশাসনের কাছে নেই। তবে বাজ পড়ে প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। এই অবস্থায় করণীয় কী, তা নিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। তাঁর কথায়, ‘‘বাজ পড়ে জেলায় মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। বিষয়টি আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।”
গত জুনে জেলায় বৃষ্টি তেমন হয়নি বললেই চলে। বৃষ্টি শুরু হয় জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে। তারপর থেকেই বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে শুরু করে। বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা।
এ বার প্রাণহানির সংখ্যা কেন বেশি, তার নির্দিষ্ট কোনও কারণ প্রশাসনের জানা নেই। তবে আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, বৃষ্টি দেরিতে শুরু হওয়ায় এখন ধান রোয়ার কাজ জোর কদমে চলছে। সেই কারণে মাঠে থাকতে হচ্ছে কৃষকদের। বাইরে থাকার কারণে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের।
অনেকের মতে, বাজ পড়ে এক মাসের মধ্যে এত সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর নজির পুরুলিয়ায় নেই। এ বছর কেন এত বেশি বাজ পড়ছে, তার কারণ জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, এই বছর পুরুলিয়াতে বজ্রপাতের সংখ্যা অতীতের তুলনায় অনেকটাই বেশি। দূষণ বাড়লে বেশি বাজ পড়ে।
পুরুলিয়াতে দূষণের মাত্রা লাগামছাড়া নয় বলেই মনে করেন প্রশাসনের একাংশ। তবে কেন বজ্রপাত বাড়ছে?
ধ্রুবজ্যোতিবাবুর মতে, নিয়মিত বৃষ্টি না হওয়াই এর অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, ‘‘ধুলিকণা উপরে উঠে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করে। দূষণ এবং অন্য কারণে ধুলিকণা বেশি তৈরি হচ্ছে। নিয়মিত বৃষ্টি হলে তা বৃষ্টির সঙ্গে মাটিতে নেমে আসতে পারত। কিন্তু তা না হওয়ায় ধুলিকণা বেশি পরিমাণে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করছে।” তবে তিনি এ-ও জানান, এই ব্যাখ্যা একেবারেই তাদের ‘প্রাথমিক অনুমান’।
ভারী বৃষ্টির সময় মানুষ যাতে ঘরের বাইরে না বেরোয় তার জন্য প্রশাসন প্রচার শুরু করতে চাইছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘বাজ পড়ে মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কিন্তু অর্থ কখনই জীবনের পরিপূরক হতে পারে না।’’ পঞ্চায়েতগুলি এই নিয়ে প্রচারে নামছে।