কলকাতা প্রেস ক্লাবে সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে ‘সব দোষীরা’ যত দিন না ধরা পড়ছে, তত দিন তাঁদের আন্দোলন চলবে জানালেন সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন ডোরিনা ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে ফের আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভাঙচুরের দায় বিজেপির পাশাপাশি সিপিএমের উপরে চাপালেন, সে দিনই ফের মীনাক্ষী সেই দাবি উড়িয়ে দিলেন। সিবিআই তদন্তে আস্থা জানিয়েও তাদের দিকে ‘নজর থাকবে’ বলেও জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার বিষয়টি চিকিৎসকদের ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন সিপিএমের যুব সম্পাদক।
কলকাতা প্রেস ক্লাবে শুক্রবার মীনাক্ষী বলেছেন, “যত দিন না নির্যাতিতা, তাঁর বাবা-মা বিচার পাচ্ছেন, সব দোষীরা গ্রেফতার হচ্ছে, তত দিন লড়াই চালাতে হবে। দোষীদের বাঁচানোর জন্য যে মরিয়া চেষ্টা, সেটা রুখতে হবে।” এই আন্দোলনকে রাজ্যব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ারও ডাক দিয়েছেন তিনি। আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় গোড়া থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীদের একাংশ কিছু ভিডিয়ো ফুটেজের (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সূত্র ধরে দাবি করছেন, এতে ডিওয়াইএফআই-এর পতাকা দেখা গিয়েছে। অতএব, তারা ওই হামলায় জড়িত। বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে মীনাক্ষী এ দিন ভাঙচুরের ঘটনাকে ধিক্কার জানান। সেই সঙ্গেই বলেন, “লড়াই-আন্দোলনে পতাকা থাকবে না? পতাকা পাওয়ার একমাত্র ঠিকানা আমাদের দফতর নয়, বড়বাজারেও তা পাওয়া যায়। আমরা আমাদের পতাকা কাঁধে নিলে সেটা দায়িত্ব নিয়ে নিই।”
মীনাক্ষীর সঙ্গে এ দিন ছিলেন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ঈশিতা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আন্দোলন চালাতে হবে, এমন ডাক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মীনাক্ষীরও বক্তব্য, “সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা নিতে আসেন একদম পিছিয়ে পড়া মানুষ। তাঁদের কী ভাবে পরিষেবা দেওয়া যায়, সেটা চিকিৎসকদের চিন্তাভাবনা করার আবেদন জানাচ্ছি।”
আরজি কর-কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তে নেমেছে। এই প্রসঙ্গে মীনাক্ষী অতীতের কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, “আমাদের নজর রইল নিজাম প্যালেসে। সিবিআই-কে দায়িত্ব দিয়েছে, ঠিক আছে। কিন্তু ‘ট্র্যাক রেকর্ড’ ভাল নয়। তবু আমরা আস্থা রাখছি। দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।”
হাসপাতালে তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম এ দিন যে মন্তব্য করেছেন, তাকেও হাতিয়ার করে সরব হয়েছে বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যিনি নেত্রী, তাঁর লজ্জা, অপমানবোধ থাকলে, বিচারপতির কথা নিশ্চয়ই তাঁকে অপমানিত করবে। পুলিশের কর্তারা তৃণমূল কংগ্রেসের ক্রীতদাস! সিবিআই-এর উচিত মাজাভাঙা পুলিশের আধিকারিকদেরও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা।’’