আর জি কর-কাণ্ডে ন্য়ায়-বিচারের দাবিতে গণ-কনভেনশন। অশোকনগরে। —নিজস্ব চিত্র।
আর জি কর-কাণ্ডে সিবিআইয়ের ‘ব্যর্থতা’র অভিযোগ তুলে প্রতিবাদের স্বর আরও জোরালো করছে বিরোধীরা। তারা বার বার শাণ দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস-বিজেপি আঁতাঁতের অভিযোগেও। বিরোধীরা আজ, সোমবার থেকে ফের নানা প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাকও দিয়েছে। তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা দাবি, রাজ্যের হাতে এই ঘটনার তদন্ত থাকলে দ্রুত শাস্তি হত।
আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআই সময়ে চার্জশিট দিতে না-পারায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিনের প্রতিবাদে শনিবারই কলকাতায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিল এসএফআই। এর পরে ‘নির্যাতনের বিচার চাই, স্বৈরাচারের ক্ষমা নাই’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে মঙ্গলবার এসএফআই, ডিওয়াইএফআই এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির যৌথ প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা এসএফআই-ও আজ, সোমবার সোদপুর ট্র্যাফিক মোড় থেকে ‘জাস্টিস মার্চ’-এর ডাক দিয়েছে, যা শেষ হবে পরদিন বারাসতে। নবদ্বীপে এ দিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ‘সব অংশের মানুষকে নিয়ে’ লড়াইয়ের বার্তা দেওয়ার পাশাপাশিই দাবি করেছেন, “যত অপরাধ, অন্যায়ই হোক না কেন, আরএসএস এবং নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে দিদিই (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) শেষ কথা। বিজেপির এখানে মমতাকে দরকার। মমতাও চান বিজেপি কেন্দ্রে থাকুক। শুভেন্দু অধিকারী সাজানো বিরোধী! কিছুই করতে পারবেন না। পুতুলনাচের চরিত্র!”
গণ-কনভেনশন। —নিজস্ব চিত্র।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারেরও বক্তব্য, “রাজ্য এবং কেন্দ্র যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁরাই আবার বিচার চাইছেন! এর জন্যই বিচারের বাণী নীরবে নিভৃত কাঁদছে।” আগামী ১৮ ডিসেম্বর যুব কংগ্রেস ‘নেশা নয়, চাকরি চাই’ স্লোগান দিয়ে রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছে। এআইসিসি-র নির্দেশে মণিপুরে হিংসা এবং আদানি-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি আর জি করে বিচারের দাবিও সেখানে তোলার কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে আজ রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়ের বক্তব্য, “সিবিআইয়ের চার্জশিট না দিতে পারা শুধু মানুষের আস্থার উপরে চরম অপমানই নয়, এটা ক্ষমতাসীন সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলির আঁতাঁতকেই স্পষ্ট করছে।”
তবে ঘটনার তদন্ত-ভার রাজ্যের হাতে থাকলে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা হত বলেই দাবি করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বর্ধমানে বলেছেন, “এর মধ্যে পরপর দু’টি ঘটনায় আমাদের রাজ্যের পুলিশ তদন্ত করল। ৬০-৬২ দিনে সাজাও হয়ে গেল। আমরা পারি, সিবিআই কেন পারছে না?” আর সন্দীপ ও অভিজিতের প্রসঙ্গে তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “দেখা যাচ্ছে, যাঁরা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁদের চাপেই সিবিআই তথ্য-প্রমাণ ছাড়া গ্রেফতার করেছিল। আন্দোলনের নামে ‘থ্রেট’ চলছে!”