Recruitment scam

ওঁদের পুজো কেটে গেল ধর্না মঞ্চেই

এসএসসি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদের চাকরিপ্রার্থীরা ৪২৭ দিন ধরে ধর্নায় বসে আছেন। গত বছরও পুজো কেটেছিল এই মঞ্চে। এ বারও তাই। দুর্গায় বিদায় বেলায় তাই পথনাটিকার আয়োজন করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৩৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব শেষ। ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে আলোর রোশনাই, ঢাকের বাদ্যি। মানুষও কয়েক দিনের ছুটি শেষে ফের কাজে ফিরবেন। কিন্তু ওঁদের পুজোর শুরু এবং শেষ হল ধর্না মঞ্চেই। ওঁরা স্কুলে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী পদের চাকরিপ্রার্থী। দিনের পর দিন রোদ, ঝড়, জল উপেক্ষা করে ওঁরা অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন। আইনি লড়াইও লড়ছেন। সেই লড়াইয়ে একের পর এক বাঁক আসছে। কিন্তু কোনও বাঁকের শেষেই আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। তাই এ বার যেন ঈশ্বরের কাছেই হাত পাতছেন ওঁরা। সেই আশাতেই মঙ্গলবার দশমীর দিন পথনাটিকার আয়োজন হয়েছিল ধর্মতলায়।

Advertisement

এসএসসি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদের চাকরিপ্রার্থীরা ৪২৭ দিন ধরে ধর্নায় বসে আছেন। গত বছরও পুজো কেটেছিল এই মঞ্চে। এ বারও তাই। দুর্গায় বিদায় বেলায় তাই পথনাটিকার আয়োজন করেছিলেন। পালার নাম, মূর্খাসুর বধ। আন্দোলনকারীরাই কেউ সাজলেন অসুর, কেউ দুর্গা, কেউ বা লক্ষ্মী, সরস্বতী। নাটক অনুযায়ী, মর্ত্যে সপরিবার এলেন দুর্গা। এসেই শুনলেন নিয়োগ দুর্নীতির কথা। দুর্গার সন্তানরাই মর্ত্যবাসীর এই কষ্টের কথা জানালেন তাঁদের মাকে। এই যে দুর্নীতি, জালিয়াতি—এর পিছনে উঠে এল মূর্খাসুরের কারসাজির কথা। অতঃপর দেবী নামলেন অসুর নিধনে। নাটকে অসুর নিধন করে দুর্গা মর্ত্যে শান্তিস্থাপন করলেন। তবে বাস্তবে এই দুর্নীতির চক্রীরা কবে ধরা পড়বেন কেউ জানেন না। আয়োজকদের তরফে অষ্টপদ সামন্ত বলেন, তাঁরা নানা ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কোনও ভাবেই সেটা হচ্ছে না। বিজয় দশমীর দিন তাঁরা সরকারকে বার্তা দিলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই অসুররূপী দুর্নীতিকে যেন বধ করে তাঁদের হকের চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করে সরকার। তবে এ সব নাট্য আবহের বাইরেও নিয়োগ না হওয়ার ব্যথা বুকে কাঁটার মতো বিঁধছে অনেকের। এক চাকরিপ্রার্থী বলছেন, ‘‘গত বছর বিজয়া দশমীর দিন ভেবেছিলাম, এক বছরের মধ্যে নিয়োগ হবে। পুজোয়, বিজয়ায় বাড়ির লোকের সঙ্গে আনন্দ করব। কিন্তু কোথায় কী? উৎসব কাটল এই ধর্না মঞ্চেই।’’

গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ৯৫২ দিন ধরে ধর্না অবস্থান চালাচ্ছেন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। তাঁদেরই এক সদস্য অভিষেক সেন বলেন, "বছরের পর বছর শুধু প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়েছে এই সরকার। যারা যোগ্য নন তাঁদের অনেকে স্কুলে চাকরি করতে যাচ্ছেন। আমরা যোগ্য প্রার্থীরা রাস্তায় বসে আছি। সন্দেহ হয় পরের বছর পুজোতেও কি এই অবস্থাই থাকবে? সরকারের কাছে অনুরোধ সুপার নিউমেরিক পোস্টে (অতিরিক্ত পদ) আমাদের সবাইকে নিয়োগ করা হোক।" এ বছর পুজো শেষ। দশমীর তিথি শেষের আগেই আগামী বছরের পুজোর দিন গোনা শুরু করেছেন অনেকে। ওঁরাও দিন গুণছেন। মেধা অনুযায়ী স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগের। দিন গুণতে গুণতে আগামী বছরের পুজো হয় তো এসে যাবে। কিন্তু ওঁদের স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগের জন্য দিন গোনা শেষ হবে কি না, জানা নেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement