মানববন্ধন এবং মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রতিবাদের প্রস্তুতি। ছবি: সারমিন বেগম।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। কলকাতা তো বটেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলন চলছে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে বসছে না প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ওই বেঞ্চেই আরজি কর-কাণ্ডের মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে বুধবার বিচারের দাবিতে আবার ‘রাত জাগবে’ বাংলা। শুধু তা-ই নয়, দিকে দিকে মানববন্ধন এবং মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রতিবাদের ডাক দেওয়া হয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রতি দিনই কোনও না কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। জুনিয়র ডাক্তারেরা পথে নেমেছেন। আরজি করের সামনে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য ভবন থেকে লালবাজার অভিযান— জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদে পা মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষও। বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বও প্রতিবাদে শামিল। বুধবার রাত ৯টা থেকে আরজি করের সামনে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানে এক ঘণ্টা প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করার কর্মসূচি রয়েছে। শুধু আরজি কর নয়, এই কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়েছে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। বিভিন্ন হাসপাতালের সামনেও একই ভাবে প্রতিবাদ করবেন আন্দোলনকারীরা।
কলকাতা ছাড়িয়ে এই আন্দোলনের রেশ মফস্সলেও পড়েছে। সন্ধ্যা থেকেই সেই প্রস্তুতি তুঙ্গে। আরজি করের প্ল্যাটিনাম বিল্ডিংয়ের সামনে প্রদীপ দিয়ে সাজানো চলছে। সেই সঙ্গে রয়েছে হাতে লেখা পোস্টার। সব কিছুর মর্ম এক। ‘আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চাই’, ‘দোষীদের শাস্তি’র দাবিও। হাওড়া, হুগলির বিভিন্ন কোচিং সেন্টার সন্ধ্যার পরেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোও। নিউ টাউনে তথ্যপ্রযুক্তির সংস্থার কর্মীরা মিছিল করেছেন বুধবার সন্ধ্যাতেই। যাদবপুরেও আন্দোলনকারীদের জমায়েত শুরু হয়েছে। মিছিল, পথনাটিকার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বুধবার রাতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জমায়েত এবং রাত দখলের কর্মসূচি নিয়েছেন অনেকে।
নানা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। কলকাতা পুলিশের তরফে জানোন হয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতালে যেখানে যেখানে জমায়েত সেখানে সেখানে পুলিশ পিকেট বসবে। ডিসিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত ফোর্সও থাকবে। উল্লেখ্য, গত ১৪ অগস্ট ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আরজি করে। দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায়। হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়। সেই কথা মাথা রেখেই নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হচ্ছে। পুলিশ ছাড়াও আরজি করে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও।