—ফাইল চিত্র।
চেনা শ্যামাসঙ্গীতের সুরে ভেসে যাচ্ছে পার্ক সার্কাসের রামলীলা ময়দান বা ধর্মতলায় নিউ মার্কেট লাগোয়া চত্বর। ‘আমার মায়ের পায়ের জবা হয়ে ওঠ না ফুটে মন’-এর ধার করা সুরেই নয়া নাগরিকত্ব আইনের নামে দেশকে আর একবার ভাঙার অপচেষ্টার তত্ত্ব ছবির মতো উঠে এল।
‘যত বানিয়া নেতা হয়, মাঝে দাঙ্গা যে বাধায়/ হিঁদু মোচলমানের লাশ ফেলে দেয় পাল্টিটাও যে হয়...’’
সমসময়ের প্রতিবাদের ভাষা সুরে-সুরে পৌঁছে দেওয়ার শরিক জনগণমন দলের মণিদীপা সেন, অঙ্কিতা আলিরা গান শেষে বলছিলেন, এই লিরিক যিনি লিখেছেন সেই রাজা বিশ্বাসকে কয়েক মাস আগে হারানোর কথা। ঠিক এক বছর আগে দেশের সংসদে কালা কানুন সিএএ চাপানোর পরেও এমন অজস্র মুখ পথে নেমেছিলেন। শুক্রবার কোভিড-ধ্বস্ত দিনে ভিড় কিছুটা কম হলেও, সেই পুরনো মেজাজের ছায়াই আছড়ে পড়ল। নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি, এনপিআর বাতিলের দাবির সঙ্গে কৃষি বিল বাতিলের দাবিও এ দিন যোগ হয়েছে।
পার্কসার্কাস থেকে ধর্মতলা— কলকাতার কলেজপড়ুয়াদের সঙ্গে মিছিলে শামিল জয়নগরের দরজি সাবির বা কান্দির চাষি মঙ্গল মুর্মু, জেএনইউ-এর প্রাক্তনী সন্দীপ, সমাজকর্মী মা শর্মিষ্ঠা রায়। ভাঙড়, নৈহাটি, বর্ধমান, ডোমকল, জলঙ্গির বিভিন্ন গণসংগঠনের সঙ্গে কলকাতার নারীবাদী মঞ্চের প্রতিবাদী মুখ। বিহারে বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের মুখ সিপিআই এম-এলের দুই বিধায়ক মনোজ মঞ্জিল ও সন্দীপ সৌরভও স্লোগান দিতে দিতে হাঁটছেন। ইউএপিএ আইনে জেল খেটে দু’বছর আগে রেহাইপ্রাপ্ত ৮৮ বছরের গৌর চক্রবর্তী সাতসকালে ট্রেনে মদনপুর থেকে হাজির। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারবাবু আনোয়ার হোসেন জয়নগরে তাঁর সংগঠন থেকে শ’খানেক লোক জুটিয়েছেন। এনআরসি বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অরূপ মজুমদারের কথায়, “প্রতিবাদে পিছু হটেই ওরা কালা কানুন চালু করতে পারেনি। এটা বাতিল হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ জারি রাখতে হবে।”