গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে কচিকাঁচা পড়ুয়ারা পা মেলিয়েছে কেন? এই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্কুলকে শোকজ় নোটিস পাঠিয়েছে শিক্ষা দফতর। চিঠি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে হাওড়ার তিনটি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের একটি স্কুলকে। এই খবর সামনে আসার পর হুগলি থেকে পূর্ব মেদিনীপুর, একাধিক জায়গায় মিছিল করলেন ছাত্র অভিভাবকেরা। আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে জায়গায় জায়গায় মিছিল এবং আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে। শুক্রবার এমনই কয়েকটি মিছিলে স্কুলপড়ুয়ারা ছিল। এতে শিশুদের অধিকার এবং শিক্ষাঙ্গনে বিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানায় শিক্ষা দফতর। তারই প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে মিছিল করল পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না দক্ষিণ আনুখা মোক্ষদা বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। তাদের বিক্ষোভের জেরে শিক্ষকেরা স্কুলে ঢুকতে পারেননি। ওই পড়ুয়াদের দাবি, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে তারাও মিছিলে পা মেলাতে চায়। তাই শিক্ষা দফতর তাদের নির্দেশ প্রত্যাহার করুক। পড়ুয়াদেরও মিছিলের যোগদানের অনুমতি দেওয়া হোক।
বেলা বাড়তেই একে একে স্কুলে হাজির হন প্রধানশিক্ষক থেকে সহ-শিক্ষক, শিক্ষিকারা। কিন্তু বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা তাদের দাবিতে অনড়। দীর্ঘ সময় এ ভাবে বিক্ষোভ চলার পর ছাত্রছাত্রীরা স্কুল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় মিছিল সংঘটিত করে। তারা এ-ও জানিয়েছে, শুক্রবার প্রধানশিক্ষকের কাছে মিছিলের অনুমতি চেয়ে পাওয়া যায়নি। তারও প্রতিবাদ হচ্ছে এই মিছিল থেকে। মিছিল থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রী দীপশিখা (নাম পরিবর্তিত) বলে, “আমরা চাইছি, আমাদের আন্দোলনে অনুমতি দেওয়া হোক। কলকাতায় যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা জানিয়ে আমরা প্রতিবাদ মিছিলে আমরাও শামিল হতে চাই। স্কুলের পোশাকেই আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করব। এই অনুমতি-না দেওয়া হলে আমরা স্কুলে যাব না।” ওই ছাত্রী জানিয়েছে, তাদের মিছিলে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রী, সকলেই শামিল হয়েছে।
পড়ুয়াদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার-সহ সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের কণ্ঠরোধ করতে নির্দেশিকা জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। আরজি করের ঘটনায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদ, আন্দোলন চলছে। সেখানে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদে শামিল হতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া ন্যক্কারজনক ঘটনা।’’
একই ইস্যুতে মিছিল হয়েছে উত্তরপাড়াতেও। ছাত্র, শিক্ষক থেকে অভিভাবকেরা একসঙ্গে পথে নামেন সেখানে। সকলেই স্লোগান তোলেন, ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’। উত্তরপাড়া অমরেন্দ্র বয়েজ় স্কুলের শিক্ষক থেকে পড়ুয়া একসঙ্গে মিছিলে পা মেলান। ওই স্কুলের টিচার ইনচার্জ বলেন, ‘‘স্কুল ছুটির পর মিছিল সংঘটিত করা হয়েছে। কোনও ছাত্র বা শিক্ষককে জোর করে রাস্তায় নামাতে হয়নি।’’