গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পুজোর সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যানের শরিক হল আরও হুগলির আরও এক ক্লাব। এ বার আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ উত্তরপাড়ায় মহিলা পরিচালিত ‘বৌঠান সঙ্ঘ’ জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার ঘোষিত ৮৫ হাজার টাকা তারা নিচ্ছে না। ইতিমধ্যে এই মর্মে একটি চিঠি জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে ওই ক্লাব। বস্তুত, এই নিয়ে উত্তরপাড়ার তৃতীয় দুর্গাপুজো কমিটি পুজোর অনুদানে ‘না’ বলে দিয়েছে। এর আগে ‘উত্তরপাড়া শক্তি সঙ্ঘ’ এবং ‘আপনাদের দুর্গাপুজো’ কমিটি আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে জানিয়ে দেয়, এ বার তারা সরকারি আনুকুল্যে পুজো করবে না। তারা আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার বিচার চায়।
আরজি করের ঘটনায় উত্তাল নাগরিক সমাজ। কর্মক্ষেত্র থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে— সমাজের সর্বত্র মহিলাদের সুরক্ষার দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে। ‘বৌঠান সঙ্ঘ’-এর দাবি, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীসুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে। এ বার পুজোয় সরকারি অনুদান নিতে অস্বীকার করা প্রতিবাদেরই একটা দিক বলে জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। ‘বৌঠান সঙ্ঘ’-এর সভানেত্রী রিনা দাস বলেন, ‘‘আমরা প্রতি বার পুজোর অনুদান নিয়ে থাকি। এ বছর আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সরকারি অনুদান নিচ্ছি না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘নির্মম ভাবে চিকিৎসককে নির্যাতন করে মারা হয়েছে। তার বিচার চাইছি আমরা।’’ শনিবার ধর্ষিতা এবং মৃতা চিকিৎসকের স্মৃতিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে নীরবতা পালন করেন। ওই পুজো কমিটির সদস্য ঋতুপর্ণা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘শুধু আরজি কর নয়। এমন অনেক ঘটনাই ঘটে। কিন্তু সেগুলো অনেক সময় সামনে আসে না। আমরা সব ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আর এই প্রতিবাদ থেমে গেলে হবে না। এমন ঘটনা ঘটলেই তার প্রতিবাদ করতে হবে।’’
উল্লেখ্য, তৃণমূল সরকার প্রতি বছর দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে আর্থিক সাহায্য করে। প্রথম দিকে আর্থিক অনুদানের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার টাকা। বাজারদরের কথা মাথায় রেখে প্রতি বছরই সেই আর্থিক অনুদানের পরিমাণ কিছুটা করে বৃদ্ধি হয়। চলতি বছর পুজো কমিটিগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা করে সরকারি আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর এই আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৭০ হাজার।