West Bengal Panchayat Election 2023

দিতে হবে বাড়তি ভাড়া, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কমিশনের উপর চাপ বৃদ্ধি বেসরকারি বাসমালিকদের

প্রতি বার ভোট উপলক্ষে সরকারি এবং বেসরকারি বাস ভাড়ায় নেয় কমিশন। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কিন্তু এ বার বাস ভাড়া বৃদ্ধি করতে নির্বাচন কমিশন-সহ রাজ্য প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চলেছেন বেসরকারি বাসমালিকেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৩ ১৪:০৪
Share:

বাস ভাড়া বাড়ানোর চাপ বৃদ্ধি বেসরকারি বাসমালিকদের। —ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করতে প্রচুর বাসের প্রয়োজন হবে নির্বাচন কমিশনের। প্রতি বার ভোট উপলক্ষে সরকারি এবং বেসরকারি বাস ভাড়ায় নেয় কমিশন। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কিন্তু এ বার বাস ভাড়া দিতে নির্বাচন কমিশন-সহ রাজ্য প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতে চলেছেন বেসরকারি বাসমালিকেরা। ইতিমধ্যে নিজেদের দাবির পক্ষে যুক্তি সাজিয়ে পরিবহণ দফতরকে চিঠি দিয়েছে দু’টি বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠন। সেই চিঠিতে ভোটের কাজে ভাড়ায় দেওয়া বাসগুলির ভাড়া বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের যুক্তি, গত কয়েক বছরে যে ভাবে ডিজেল এবং পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে বাস ভাড়া বাড়ায়নি সরকার। তার উপর ভোটের কাজে গাড়ি ভাড়া দেওয়া যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। তাই সব দিক বিবেচনা করে কমিশন ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিক।

Advertisement

সম্প্রতি পরিবহণ দফতরে নিজেদের দাবিসনদ জমা দিয়েছেন সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেস। ওই লিখিত দাবি সনদে তারা যুক্তি দিয়েছে, কেন কমিশন এবং সরকারের বাস ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টিতে সহমত হওয়া উচিত। সংগঠনের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘আমরা বাস ভাড়ায় দেব না এমনটা বলছি না। তবে নির্বাচন কমিশন এবং পরিবহণ দফতরের আমাদের দাবিগুলিও খতিয়ে দেখা উচিত। কারণ, বাস চালানোর খরচা দিন দিন যে ভাবে বেড়েছে, তাতে বেসরকারি বাস পরিষেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় সরকার পক্ষের উচিত আমাদের দাবিগুলির যৌক্তিকতার বিষয়টি মাথায় রাখা।’’

এত দিন পর্যন্ত বেসরকারি কোনও বাস ভাড়ায় নেওয়া হলে নির্বাচন কমিশন তাদের দিন প্রতি ২৩০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া দিত। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেস সেই ভাড়া বাড়িয়ে দিন প্রতি ৩ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে।

Advertisement

গত এপ্রিল মাসে এই সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবহণ দফতর একটি ডেপুটেশন জমা দিয়েছিল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ সিন্ডিকেট। সেই ডেপুটেশনে মোট সাতটি দাবির উল্লেখ করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে দৈনিক বাস ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার টাকা করার দাবি জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি প্রতি দিন বাসের তিন জন করে শ্রমিককে ৩০০ টাকা করে খোরাকি দেওয়ার আবেদন করেছিল বাস সিন্ডিকেট। সঙ্গে বলা হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকাকালীন ডিজেল ও মবিল সরবরাহের দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। বাস ভাড়ার ৭৫ শতাংশ অগ্রিম দিতে হবে। ভোট প্রক্রিয়া নিতে গেলে ১৫ দিনের মধ্যে বাকি বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। কমিশন বাসগুলি ভাড়া নেয় পরিবহণ দফতর মারফত। নিজেদের দাবির পক্ষে বাস সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেসরকারি বাস পরিষেবা কোমায় চলে গিয়েছে। আমাদের দাবি মেনে সরকার বাসের ভাড়া বাড়ায়নি। কিন্তু সরকারি নির্দেশ মেনে যখন ভোটের কাজে আমরা বাস পাঠাব তখন আমাদের দাবিগুলিও সরকার পক্ষকে অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে।’’ বিভিন্ন জেলায় থাকা মোটর ভেহিকেলস ইন্সপেক্টররা পরিবহণ দফতরের তরফে নির্বাচন কমিশনকে এই পরিষেবা দিয়ে থাকেন। রাজ্য সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে নির্ভর করতে হয় রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর। তাই একক ভাবে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নিতে পারে না। বেসরকারি বাসমালিকেরা যখন তাদের দাবির কথা পরিবহণ দফতরকে জানিয়েছেন তখন অবশ্যই তা বিবেচনা করে দেখা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement