ভাড়া না বাড়লে বেসরকারি বাস রাস্তায় নামাতে নারাজ বাস মালিকরা। ফাইল চিত্র
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১ জুলাই থেকে রাস্তায় বেসরকারি বাস চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছেন। কিন্তু পুরনো ভাড়ায় আর বাস চালাতে নারাজ বেসরকারি বাস মালিকরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ঘোষণায় জানিয়েছেন, শহর কলকাতায় ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বেসরকারি বাস চালানো যাবে। কিন্তু আগের ভাড়ায় আর বাস চালানো সম্ভব হবে না বলেই জানিয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট। ২০২০ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কোভিড সংক্রমণের কারণে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ওই বছর জুন মাস থেকে আনলক পর্ব শুরু হলেও বেসরকারি বাস পরিষেবা পুরোপুরি শুরু করা যায়নি। সেই সময় থেকেই বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন বেসরকারি বাস মালিকরা। তাঁদের দাবি মেনে একটি কমিটিও গড়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই কমিটিও ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারেনি।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে চলতি বছরের ১৬ মে থেকে সরকারি বিধিনিষেধ জারি হয়ে যায়। কিন্তু ১ জুলাই থেকে মুখ্যমন্ত্রী আবারও বেসরকারি বাস মালিকদের বাস নামাতে বলেছেন। এ দিকে ভাড়া না বাড়ালে এবার আর তাঁরা বাস রাস্তায় নামাতে চাইছেন না। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের অধীনে রাজ্য জুড়ে ৪২ হাজার বেসরকারি বাস চলে। কলকাতা ও শহরতলি এলাকা থেকে রোজ প্রায় সাড়ে সাত হাজার বেসরকারি বাস চলাচল করে। সরকারি বিধিনিষেধের কারণেই এই বাস পরিষেবা বন্ধ। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে তাঁরা যে বাস রাস্তায় নামাবেন না, সেই সিদ্ধান্তে অটল বাস মালিকরা। সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘বাস নামাতে হবে পুরনো ভাড়ায়, তাও আবার ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে! এমনিতেই বেসরকারি বাস পরিষেবা কোমায় চলে গিয়েছে। এখন যদি বাস ভাড়া বাড়ানো না হয়, তাহলে আমাদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব নয়।’’
নিজের বাস না চালানোর যুক্তি প্রসঙ্গে তপন বলেছেন, ‘‘ন্যূনতম সাত টাকা ভাড়ায় আমাদের পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। গত বছর ডিজেলের লিটার ছিল ৬৮ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৯৩ টাকা। পাশাপাশি বাস চালাতে যে পরিকাঠামো প্রয়োজন, তার ব্যবস্থাও করতে হয় বাস মালিকদেরই। সরকার যদি পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা দিত বা বাস ভাড়া মালিকদের স্থির করার অধিকার দিত, তা হলে হয়তো আমরা বাস পরিষেবা চালু করতে পারতাম।’’