প্রায় ২ বছর কেটে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল স্কুল-কলেজ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছিল সেই ছবিটাও। বছর দুই কাটিয়ে সেই চেনা উঠোনে ফিরে এসেছিল শিক্ষার্থীরা। চেনা পোশাক পরে স্কুল ব্যাগ নিয়ে স্কুলে আসা, টিচারের লেকচার, একঘেঁয়ে অনলাইন ক্লাসের ঘোর কাটিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়া, আরও কত কী! দুই বছরের কোভিড পর্ব কাটিয়ে যখন স্কুল খুলেছিল, তখন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শিক্ষার্থী, প্রত্যেকের মধ্যেই আনন্দের যেন সীমা ছিল না। অন্যান্যদের মতোই এ কথা স্বীকার করে নিলেন বিবেকানন্দ মিশন স্কুলের প্রিন্সিপাল শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর কথায়, “প্রাণহীন স্কুলগুলিতে প্রাণ ফিরেছিল নভেম্বর মাসে। পরিস্থিতি যখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। সরকারের তরফে নির্দেশও এল ধাপে ধাপে নির্দিষ্ট সংখ্যাক শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুল খোলা যাবে। যেহেতু কাউন্সিলের পরীক্ষা চলছিল, আমরা আমাদের স্কুলে বোর্ডের শিক্ষার্থীদের আসার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম।”
শুধু স্কুলে ফিরে আসা নয়, শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে, সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাস করতে পারে, তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা নিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল প্রাঙ্গন স্যানিটাইজ করা থেকে, শিক্ষার্থীদের উপরে নজর রাখা, ফ্লেক্স টানিয়ে রাখা, স্কুলে জরুরি মেডিক্যাল অবস্থা তৈরি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, সবটা নিয়ে চালু হয়েছিল জোকার বিবেকানন্দ মিশন।
ফের মাথা চাড়া দিয়েছে কোভিড। স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই পুনরায় চালু হয়েছে অনলাইনে পড়াশুনা। ফের বন্ধ হয়েছে গিয়েছে স্কুলের চৌকাঠ। তবে অতীতে লকডাউনে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা সুষ্ঠুভাবে চালাতে বিশেষ নজির রেখেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই পথেই এবারও হাঁটতে চাইছে তারা। এই প্রসঙ্গে শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “লকডাউনে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তারা যাতে ভাল ভাবে লেখা-পড়া করতে পারে, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিবেকানন্দ মিশন স্কুলের নিজস্ব একটি অ্যাপ রয়েছে। বিগত লকডাউনের সময়ে যেটিকে আপগ্রেড করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে জোরকদমে চলেছিল পড়াশুনা। প্রথমে শুরু হয়েছিল শুধু পড়ানো। তার পরে শিক্ষার্থীদের লিখতে দেওয়া। লেখা হয়ে গেলে সেগুলিকে চেক করে দেওয়া, সব কিছুর দিকেই বিশেষ নজর রেখেছিলেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমনকী সমস্ত ইভেন্ট ভার্চুয়ালি হয়েছিল। অনলাইনেই আয়োজন করা হয়েছিল ফেস্টের। শিক্ষার্থীরা যাতে কোনওভাবে হতাশ বোধ না করে, সে কথা ভেবেই সব পরিকল্পনা করা হয়েছিল।”
শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য শেষ করতে গিয়ে জানালেন, কোভিডের কারণে অনেক ক্ষতি হয়েছে। বহু কিছু কেড়ে নিয়েছে এই কোভিড। আবার পরোক্ষভাবে অনেক কিছু শিক্ষাও দিয়ে গিয়েছে। এভাবে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, আগে দেখেনি বিশ্ব। তবে যাই হোক না কেন, এই সব কিছুর মধ্যে দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। তৈরি করতে হবে আগামীর ভবিষ্যতকে।