শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী ও কুণাল ঘোষ
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এক অধিকারী বাড়ি থেকে তিন জনের ভোটাধিকার। দুই সাংসদ, এক বিধায়ক। বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দলের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে ভোট টানতে প্রচারে নেমেছেন। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদেরও চিঠি দিয়ে বলছেন— দ্রৌপদীকে ভোট দিন। কী করবেন শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারী? কাকে ভোট দেবেন? দু’জনেই বলছেন, বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিন্হাকে। তবে কলকাতায় নয়, দিল্লিতে গিয়ে গোপন ব্যালটে ভোট দেবেন, এ-ও জানিয়েছেন দু’জনে। আর এই নিয়েই কটাক্ষ করতে শুরু করেছে তৃণমূল।
দলীয় রাজনীতিতে কাঁথির সাংসদ শিশির এবং তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুর অবস্থান দীর্ঘ দিন ধরেই ধোঁয়াশাময়। শিশির একবার অমিত শাহের নির্বাচনী সভায় হাজির থাকলেও বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কোনও ঘোষণা করেননি। তবে তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখাও যায়নি। প্রায় দেখা যায়নি দিব্যেন্দুকেও। জল্পনা চলছিলই, এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতি ভোটে কী করবেন দু’জনে?
শিশির আগেই বলে দিয়েছিলেন, তিনি যশবন্তকে ভোট দেবেন। শুক্রবার দিব্যেন্দুর কাছেও সাংবাদিকেরা একই বিষয়ে জানতে চান। জবাবে সাংসদ জানান, দল (তৃণমূল) যাঁকে সমর্থন করছে, সেই যশবন্তকেই তিনি ভোট দেবেন। এবং দিল্লি গিয়ে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দিল্লিতে কেন? দিব্যেন্দুর কথায়, ‘‘আমি পরিষ্কার ভাবে বলি, দল আমাকে বলেনি কলকাতায় ভোট দিতে হবে। নিয়ম মেনে ১০ দিন আগে নির্বাচন কমিশনারকে জানাতে হত যে, আমি কলকাতায় ভোট দেব। দল মানে তৃণমূল সেই মর্মে আমায় কোনও নির্দেশ দেয়নি। তাই দিল্লি গিয়ে ভোট দেব। রাষ্ট্রপতি ভোট হয় গোপন ব্যালটে। দল যাঁকে সমর্থন করছে সেই যশবন্ত সিনহাকেই সমর্থন করব।’’ দিব্যেন্দু আরও জানান, তাঁর বাবা (শিশির অধিকারী)-ও দিল্লি গিয়ে ভোট দেওয়ার দিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর স্বাস্থ্য। তমলুকের সাংসদের কথায়, ‘‘আমার বাবার বয়স ৮৩। তাঁকে এখনও দিল্লি যাওয়ার অনুমতি দেননি ডাক্তার। তিনি যদি দিল্লি যান, তা হলে আমাকে যেতেই হবে।’’
শিশির-দিব্যেন্দুর বক্তব্য শোনার পরই খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। টুইটারে কুণাল লেখেন, ‘শুনলাম, তৃণমূল থেকে নির্বাচিত কোনও সাংসদ বলেছেন, তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিন্হাকেই ভোট দেবেন। কিন্তু দিল্লি গিয়ে গোপন ব্যালটে দেবেন। তিনি বরং, ১৭ জুলাই কাঁথিতে ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির সমর্থনে দলের সভায় আসুন এবং পরদিন দলের সিদ্ধান্ত মেনে কলকাতায় ভোট দিন।’ পরে তৃণমূল মুখপাত্র এ-ও বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, দলত্যাগ বিরোধী আইনের থেকে বাঁচতে প্রকাশ্যে এ সব বলছেন দুই সাংসদ।’’ প্রসঙ্গত, শিশিরের সাংসদপদ খারিজের দাবিতে দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লাকে আগেই চিঠি দিয়েছে তৃণমূল।