ছবি- পিটিআই
‘টিম- পিকে’র প্রচারচিত্রে অটলবিহারী বাজপেয়ী হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অটলদা।’ ফেসবুকে তাদের তৈরি পেজ-এ ‘আমার গর্ব মমতা’য় কালীঘাটে মমতার বাড়িতে বাজপেয়ীর আসার ঘটনাই প্রচারচিত্রের বিষয়। দলের কাছে রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ এই ঘটনায় এই সম্বোধন ‘ছেলেখেলা’ বলে মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ।
তবে এ দিনই বাজপেয়ীর প্রথম প্রয়ান দিবসে প্রণাম জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ‘টুইট’ ছিল অনেক বেশি রাজনৈতিক বার্তাবাহী। বার্তায় বাজপেয়ীকে উদ্ধৃত করে মমতা বলেছেন, ‘‘আজ তাঁর কিছু কথা মনে পড়ে।’’ তার পরই কাশ্মীর প্রসঙ্গে মোদী সরকারকে খোঁচা দিয়ে বাজপেয়ীর উদ্ধৃতি হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘বন্দুক দিয়ে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না। সমস্যার সমাধান ইনসানিয়ত, জমহুরিয়ত ও কাশ্মীরিত এই তিনটি নীতি দ্বারা সম্ভব।’’
‘দিদির সঙ্গে বিজেপির সর্বোচ্চ নেতার’ সম্পর্ক বোঝাতে ২০০০ সালের ওই ঘটনা নিয়ে কার্টুন তৈরি করেছে টিম পিকে। এই প্রচারচিত্রে মমতার সঙ্গে সহ ছবি রয়েছে তাঁর মা প্রয়াত গায়ত্রীদেবী ও বাজপেয়ীর। কালীঘাটের বাড়িতে অতিথি হিসেবে আসা প্রধানমন্ত্রীকে বাড়িতে তৈরি মালপোয়া খাইয়েছিলেন গায়ত্রীদেবী।। সেখানেই কথোপথন হিসেবে মমতার মুখে লেখা হয়েছে, ‘‘অটলদা, আমি কৃতজ্ঞ যে আপনি আমাদের বাড়িতে এসেছেন।’’ ছবিতে দেখানো হয়েছে, মমতার মায়ের হাত থেকে মালপোয়া নিচ্ছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। আতিথেয়তায় খুশি অটলের বক্তব্য হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘‘মায়ের হাতে তৈরি মালপোয়া না খেয়ে কি থাকা যায়?’’ ছবির সঙ্গে ঘটনার উল্লেখ করে টিম পিকে যা বোঝাতে চেয়েছেন, তা হল, মমতা-বাজপেয়ীর সম্পর্ক ছিল গভীর ভালবাসা ও স্নেহের। এই সম্পর্ক নিয়ে বিরোধীরা মমতার বিজেপি-ঘনিষ্ঠ রাজনীতি যে অভিযোগ করেন, তা ঠিক নয়।
বাজপেয়ীর সঙ্গে দলনেত্রীর এই সম্পর্ক দুই দলের রাজনীতির উর্ধে বলেই মনে করে তৃণমূল। বিজেপির সঙ্গে তাঁদের রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠলে এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন মমতাও। শুক্রবার বাজপেয়ীর প্রথম প্রয়ান দিবসে প্রকাশিত এই কার্টুন নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে দলের মধ্যে। দলের এক শীর্ষনেতা বলেন, ‘‘মমতা বরাবরই বাজপেয়ীকে অটলজি বলে সম্বোধন করেছেন। অটলদা শুনিনি কখনও। মমতাকেও তিনি মমতাজি বলেই সম্বোধন করতেন বলে জানি।’’
ওই ছবিতে দেখানো হয়েছে, বাজপেয়ী বসে রয়েছেন মমতার ঘরের মেঝেয়। ঘটনার দিন অতিথি বাজপেয়ী ও তাঁর মেয়ে বসেছিলেন দুটি সাধারণ কাঠের চেয়ারে।