মেদিনীপুর শহরে শুভেন্দু অধিকারীর ফ্লেক্স— নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভার আগে মেদিনীপুর শহর জুড়ে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স, ব্যানার টাঙানো হয়েছে। তার কোনওটিতে লেখা ‘কাছের মানুষ, কাজের মানুষ’। কোনওটিতে ‘স্বাগতম শুভেন্দু অধিকারী’। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ফ্লেক্সগুলির সঙ্গে বাঁধা বিজেপি-র পতাকা।
অমিতের সভার আগে ওই ফ্লেক্স কে বেঁধেছে, তা নিয়ে রয়েছে গুঞ্জন। ‘দাদার অনুগামী’দের কথায়, ওই ছবি অনেক আগে লাগানো হয়েছিল। বিজেপি-র জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের অনেক হেভিওয়েট নেতা যোগদান করবেন আমাদের দলে। তবে কারা কারা করবেন, তা নিয়ে চমক থাকছে। শহরে অমিতজি আসছেন সে কারণে দলের পতাকা দিয়ে শহরে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। শুধু শহর নয়, তাঁর সফর সূচির রাস্তাতেও লাগানো হচ্ছে দলের পতাকা।’’
অমিতের সভার প্রস্তুতি দেখতে শুক্রবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। মেদিনীপুর কলেজ মাঠ পরিদর্শন করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন শমিত। দলের কর্মীদের নিয়ে জেলা পার্টি অফিসে বৈঠক করেন তিনি। লকেট বলেন, ‘‘তৃণমূলে ফাটল ধরছে। প্রতিদিন তৃণমূলের উইকেট পড়তে শুরু করেছে। শুধু পিসি-ভাইপো থাকবে, বাকি সব চলে আসবে। এখনও অনেক চমক বাকি আছে। যাঁরা ভালো মানুষ, মানুষের হয়ে কাজ করতে চান, তাঁদের জন্য আমাদের দরজা খোলা রয়েছে। কাকে নেওয়া হবে, তা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঠিক করবেন। বাবুল সুপ্রিয় কী বলেছেন তা ওঁর মতামত।’’
জে পি নড্ডা কনভয় হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে লকেট বলেন, ‘‘ওই ঘটনা বাংলার লজ্জা। পুলিশের সামনে ঘটনা ঘটেছে। অমিত শাহের সফরে এমন কিছু হলে মেনে নেওয়া হবে না। পুলিশকে দেখতে বলেছি বিষয়টি। বিজেপি কর্মীরা সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমরা প্রশাসনের উপর ভরসা করে বসে নেই।’’ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তায় কোনও ফাঁকফোকর রাখা হচ্ছে না। পুলিশ জানিয়েছে, যেমন নিরাপত্তা দেওয়ার কথা তা মেনে করা হচ্ছে। সফর সূচির রাস্তায় নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে।
অমিত শাহের সভাস্থল ঘুরে দেখলেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায়— নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘অমিত শাহ কৃষকদের শত্রু। আমাদের তরফে সেই প্রচার করা হচ্ছে। জেলা জুড়ে সেই প্রচার করা হচ্ছে। বঙ্গ ধ্বনি যাত্রার কর্মসূচি চলছে। দলের পতাকা এবং পোস্টার লাগানো হচ্ছে। সৌজন্যের খাতিরে অমিতের যাতায়াতের রাস্তা ফাঁকা রাখা হচ্ছে। কিছু ছেলে পতাকা লাগিয়েছিল, তা খুলে দিতে বলেছি।’’
অজিত বলেন, ‘‘অমিত আসুন এতে কোনও ক্ষতি নেই। গণতান্ত্রিক রাজ্যে যে কেউ এসে সভা করতে পারেন। বাংলায় যা উন্নতি হয়েছে তা দেখে যান। তবে সভার নামে নাটক দেখতে পাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী ৭ ডিসেম্বর যে সভা করেছিলেন তাতে এ জেলার কর্মী-সমর্থকরা এসেছিলেন। কৃষি প্রধান এলাকা, সেখানে কৃষকদের বিরুদ্ধে আইন করেছে কেন্দ্র। দিল্লিতে কৃষকেরা আন্দোলন করছেন। বাংলাকে কলুষিত করার চেষ্টা চলছে।’’ তিনি জানান, আগামী বৃহস্পতিবার খড়গপুর ডিআরএম অফিসের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ করবে তৃণমূল।