কাজী নজরুল ইসলাম। —ফাইল ছবি।
চুরুলিয়ায় কাজী নজরুল ইসলামের জন্মস্থানে তাঁর পুরনো ভিটের মতোই মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে কবির প্রদর্শশালাটি। বিস্মৃতপ্রায় সেই ভগ্নস্তূপের ছায়াতেই নজরুলের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে সম্প্রতি শুরু হয়েছে ‘নজরুল মেলা’।
প্রদশর্নীর টানে আসা পর্যটক থেকে স্থানীয় গ্রামবাসী— সকলেরই আক্ষেপ, বিদ্রোহী কবির স্মৃতিকে আরও একটু যত্ন করে সংরক্ষণ করা যেত না! কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “প্রদর্শশালার সংস্কারে বছর দেড়েক আগে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে পর্যটন দফতরের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারি দফতর থেকে তার কোনও সাড়া আর মেলেনি।”
চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমিটি আগে পরিচালনা করতেন স্থানীয় বাসিন্দাদেরই একাংশ। বছর কয়েক আগে তার পরিচালনার দায় বর্তায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপরে। যেখানে এখনও রয়ে গিয়েছে কবির ব্যবহৃত পোশাক, রয়েছে নজরুলের অজস্র পান্ডুলিপি, বাদ্যযন্ত্র, তাঁর ব্যবহৃত আসবাব। অথচ সেই প্রদর্শশালায় ঢুকলেই হোঁচট খেতে হয়। উপরে তাকালে চোখে পড়ে ছাদের কঙ্কালসার চেহারা। দেওয়ালের বিভিন্ন জায়গায় আড়াআড়ি ফাটল। কর্মীরা জানান, বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। সংসার পেতেছে উইপোকা।
প্রদর্শশালার এক কর্মীর কথায়, “সংরক্ষণ করতে হলে আমূল সংস্কারের প্রয়োজন। কিন্তু সেই উদ্যোগ কোথায়!” পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন আশ্বস্ত করছে, সংস্কারের জন্য দেড় কোটি টাকার সরকারি অনুমোদন মিলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, সরকারি ভাবে তাঁকে জানানো হয়নি কিছুই। সংশয় কাটাতে যোগাযোগ করা হয়েছিল রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে। তবে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস-এর জবাব দেননি। ফলে, স্মৃতির উপরে ধুলোই জমছে নিত্য।