প্রতীকী ছবি।
মনুষ্যবসতি বাড়ছে। কিন্তু প্রাকৃতিক ভারসাম্য টালমাটাল হয়ে ওঠায় সুন্দরবনে ক্রমশই কমে চলেছে বিভিন্ন ধরনের মাছের উৎপাদন। সেখানে বিশেষত ভেটকি, চিতল, ফলুই, ট্যাংরার মতো মাছের উৎপাদন কমে আসছে বলে গবেষকদের পর্যবেক্ষণ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক-গবেষকেরা প্রায় তিন বছর ধরে কাকদ্বীপ, নামখানা, মৌসুনি দ্বীপ, বালি দ্বীপ অঞ্চলে গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য এমন ভাবে নষ্ট হচ্ছে, যাতে ওই সব মাছের প্রজনন বিঘ্নিত হচ্ছে। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে জনবসতি বেড়ে যাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নির্বিচারে মাছ ধরার মতো বিষয়।
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক সুমনভূষণ চক্রবর্তী জানান, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মীন ধরতে গিয়ে জালে যা ধরা পড়ে, তা আর সমুদ্রে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ফলে সেই সব ছোট মাছ আর বড় হওয়ার সুযোগ পায় না। তা ছাড়া যে-সব ট্রলার সমুদ্রে যায়, তারা নির্দিষ্ট কোনও সময় না-মেনে যথেচ্ছ মাছ ধরে। সেই সব ট্রলারের তেল পড়েও দূষিত হচ্ছে জল। তার উপরে বিভিন্ন ট্রলার যে-ধরনের জাল ব্যবহার করে, তাতে মাছ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের জলজ জীব ধরা পড়ে। সেগুলো সমুদ্র থেকে তুলে নেওয়ার ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে থাকে। সেটা মাছের বড় হওয়ার পথে বড় বাধা।
সুমনবাবু বলেন, ‘‘যে-প্রাকৃতিক অবস্থায় মাছ প্রজননে অভ্যস্ত, সেই পরিবেশ না-পেলে তারা প্রজনন-বিমুখ হয়ে পড়ে।’’ যেমন ২০০৯ সালের আয়লার ফলে মাছেরা পরিচিত পরিবেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। তাঁদের এই পর্যবেক্ষণের কথা রাজ্যের মৎস্য দফতরকেও জানাচ্ছেন সুমনবাবুরা।