প্রতীকী চিত্র
সাম্প্রতিককালে কেএলও প্রধান জীবন সিংহের একের পর এক ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ্যে এসেছে। তার উপর রাজ্য থেকে এসেছে সতর্কবার্তা। তারই জেরে নাশকতা রুখতে পুজো পর্বে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হচ্ছে গোটা আলিপুরদুয়ার জেলাকে। পুলিশ সূত্রের খবর, অসম সীমানা লাগোয়া বিভিন্ন এলাকা তো বটেই, একই সঙ্গে সন্দেহজনক গতিবিধি রয়েছে এমন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি ও লিঙ্কম্যানদের উপরেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে জেলার সব ক’টি থানাকে। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের ভিড়ে এ বছর আরও বেশি সংখ্যায় সাদা পোশাকের পুলিশ মিশে থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্ভাব্য তৎপরতা সম্পর্কে কেন্দ্রের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কিন্তু এ বার নাশকতা নিয়ে আলাদা ভাবে সতর্ক করেছে রাজ্য সরকার। সেই বার্তা আসার পরেই ভুটান সীমান্ত ও অসম সীমানা লাগোয়া আলিপুরদুয়ারে কেএলও নিয়ে সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বলছে পুলিশ সূত্র।
সম্প্রতি দু’টি ঘটনায় আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে আবার সামনে এসেছে কেএলও-র নাম। প্রথমত, কেএলও প্রধান জীবন সিংহের পরপর ভিডিয়ো-বার্তা, যেখানে তিনি শাসকদলকে হুঁশিয়ারি দেওয়া থেকে শুরু করে আলাদা রাজ্য এবং সব শেষে আলাদা রাষ্ট্রের দাবিও তুলেছেন। দ্বিতীয়ত, আফগানিস্তানে তালিবানের ক্ষমতা দখল। প্রাক্তন কেএলও-রা অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, কারও কারও ২০০২-০৩ সালে আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার কথা হয়েছিল। সেই যোগাযোগ নতুন করে কেএলও-র শক্তি বাড়াতে পারে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। ফলে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার, দুই সীমান্তবর্তী জেলাতেই সতর্কতা বেড়েছে। সূত্রের দাবি, জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতেও প্রাক্তন কেএলও-দের কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এ বারে রাজ্য প্রশাসন থেকে সতর্কবার্তা জারি করতেই সক্রিয় জেলা প্রশাসন।
জেলার পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, প্রাক্তন কেএলও-দের যাঁরা চাকরিতে যোগ দেননি, তাঁদের কাউকে কাউকে নিয়ে কিছু সন্দেহ দানা বেঁধেছে। নজরদারিও শুরু করা হয়েছে। পুজোর ভিড়ে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরা মিশে থাকার পাশাপাশি বড় বড় পুজো উদ্যোক্তাদের সিসিটিভি বসাতেও অনুরোধ করেছেন পুলিশকর্তারা। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে বলেন, “প্রত্যেকটি থানাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুজোর নিরাপত্তা নিয়ে আমরা প্রস্তুত।”