Dilip Ghosh

BJP: বিজেপির কর্মসূচিতে ‘বাধা’ পুলিশের, ধৃত দিলীপ, শুভেন্দু

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ০৮:২৬
Share:

করোনা কালে সুরক্ষা বিধির তোয়াক্কা না-করে সোমবার ধর্মতলায় বিজেপির বিক্ষোভ। গ্রেফতার হচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।

দলের আট দিনের ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও’ কর্মসূচির শেষ দিন সোমবার বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ প্রমুখ।

Advertisement

বিজেপি ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও’ শিরোনামে গত ৯ অগস্ট থেকে প্রতি দিন একটি করে কর্মসূচি করেছে। তারই অংশ হিসাবে ১৯৪৬ সালের ১৬ অগস্টের ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ এবং ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’-এর স্মরণে এ দিন ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভ অবস্থানের ডাক দিয়েছিল তারা। রাজ্য সরকার ১৬ অগস্টকে ‘খেলা হবে দিবস’ বলে ঘোষণা করেছে। কিন্তু বিজেপির বক্তব্য, ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’-এর দিনে ‘খেলা হবে দিবস’ হলে হিন্দু বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত লাগবে। তাই ‘খেলা হবে দিবস’ পরিবর্তনের দাবিতে আগেই সরব হয়েছে তারা। এ দিনের কর্মসূচি থেকেও রাজ্য সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা ছিল বিজেপির অন্যতম লক্ষ্য। কিন্তু রাজ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণ বিধি চালু থাকায় পুলিশ এ দিন তাদের ওই কর্মসূচিতে বাধা দেয় এবং দলের নেতাদের গ্রেফতার করে।

বিজেপি নেতা-কর্মীরা এ দিন প্রথমে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জড়ো হতে শুরু করেন। কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনীও তৈরি ছিল। যুব নেতা সৌমিত্র, শীলভদ্র দত্ত এবং কল্যাণ চৌবে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছতেই তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন হঠাৎ পরিকল্পনা বদলে মেয়ো রোডে গাঁধী মূর্তির নিচে পৌঁছে যান দিলীপবাবু, শুভেন্দু, দেবশ্রী, জয়প্রকাশ মজুমদার-সহ দলের অন্য নেতা-কর্মীরা। সেখানে তাঁরা অবস্থান শুরু করার অল্প সময়ের মধ্যেই পুলিশ গিয়ে তাঁদের অবস্থান তুলে নিতে বলে। তাঁরা রাজি না হলে তাঁদের গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ। বিজেপি কর্মীদেরও অনেককে গ্রেফতার করা হয়। ধরপাকড়ের সময় পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মী এবং দিলীপবাবু ও শুভেন্দুর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। বিজেপি-র অভিযোগ, মহিলাদের চুলের মুঠি ধরে মেরে হিঁচড়ে নিয়ে যায় পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বিজেপির ওই রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি ছিল না। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের। দিলীপবাবুর অবশ্য প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূল খেলা হবে দিবস পালন করলে আইনে আটকায় না! শুধু বিজেপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করলেই গ্রেফতার করা হয়।’’

এ দিকে, দলের নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায় এ দিন বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। সেই সময় উল্টো দিক থেকে তৃণমূলের একটি মিছিল আসায় দু’পক্ষের স্লোগান, পাল্টা স্লোগানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অশান্তি গড়ায় দুই দলের কর্মীদের হাতাহাতিতে।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, ‘খেলা হবে দিবস’-এর বিরোধিতা করে দুপুরবেলা গ্রেফতার হলেও এ দিন সকালে নিউ টাউনের একটি মাঠে ফুটবল খেলেন দিলীপবাবু। তিনি কি তা হলে রাজ্য সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে ফুটবল খেললেন? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘কেন? আমি তো গতকালও ক্রিকেট খেলেছি। আমরা সারা বছর ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলি। যারা তাস, জুয়া, লুডো এই সব খেলে, তারা কি ভেবেছিল, ওরা এক দিন ফুটবল খেলবে বলে সে দিন অন্যরা আর কেউ ফুটবল খেলবে না?’’

দিলীপবাবুর অভিযোগের জবাবে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটাকে বাংলায় বলে, ‘দেখ কেমন লাগে’। ত্রিপুরায় মিছিল তো দূর অস্ত্, যাতায়াত করলে প্রথমে বিজেপি মারছে, তার পরে পুলিশ মামলা দিচ্ছে। অথচ, বিজেপিকে সেখানে মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে। আর এখানে তো বিজেপি আইন ভেঙে বিক্ষোভ করেছে! ত্রিপুরা আর পশ্চিমবঙ্গে সংবিধান কি আলাদা হবে নাকি?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement