বামপন্থী মহিলা সংগঠনগুলির মিছিলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি। মঙ্গলবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
ধর্না-অবস্থান এবং তার পরে আইন অমান্য অভিযানের ডাক দিয়েছিল বামপন্থী মহিলা সংগঠনগুলি। কিন্তু মিছিল শুরুর মুখেই পুলিশের বাধায় ধুন্ধুমার বাধল রাস্তায়। বামেদের অভিযোগ, পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন প্রায় দেড়শো জন মহিলা কর্মী-সমর্থক। লালবাজারের পুলিশ-কর্তারা অবশ্য লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, গ্রেফতার করা হয়েছে ২০৩ জনকে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে আজ, বুধবার রাস্তায় নামার ঘোষণা করেছে বাম ও কংগ্রেস।
সকলের জন্য রেশন, সম কাজে সম মজুরি, মেয়েদের প্রতি হিংসা বন্ধ, জাত-ধর্মের বিভেদ থামানো-সহ একগুচ্ছ দাবিতে মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভা চত্বরে ধর্না কর্মসূচি ছিল বাম মহিলা সংগঠনগুলির। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কংগ্রেস-সহ অন্য দলের মহিলা সংগঠনকেও। ধর্না-স্থলের চার পাশে ব্যারিকেড দিয়ে সেখানেই মহিলাদের ঘিরে ফেলে পুলিশ। মহিলারা মিছিল শুরু করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে। বাম মহিলা সংগঠনগুলির অভিযোগ, এলিট সিনেমার সামনে রাস্তায় ব্যারিকেডের উপরে লাঠি চালায় পুলিশ। লাঠির আঘাত লাগে বিক্ষোভকারীদের গায়ে। পড়ে গিয়ে আহত হন অনেকে। চোট লাগে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা বসু ঘোষেরও। তার মধ্যেই অনেককে ভ্যানে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। বামেদের অভিযোগ, মহিলা পুলিশ পর্যাপ্ত সংখ্যায় ছিলেন না, মহিলাদের ধরপাকড়ে দেখা গিয়েছে পুরুষ পুলিশকর্মীদেরও।
মহিলাদের ‘শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের হামলা’র নিন্দা করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু আজ রাজ্য জুড়ে ‘ধিক্কার মিছিলে’র ডাক দিয়েছেন। মহিলা-সহ সব গণতান্ত্রিক সংগঠনকে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও মহিলাদের কর্মসূচিতে পুরুষ-সহ পুলিশের আক্রমণের নিন্দা করে বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নানও আজকের প্রতিবাদে বামপন্থী ও জাতীয়তাবাদী সব সংগঠনকে যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বিজেপি যে মনুবাদের দর্শনকে চাপিয়ে দিতে চায়, তার বিরুদ্ধে কথা বললেও রাজ্য সরকারের গাত্রদাহ হয়! এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক মহিলা আন্দোলনের সেনানীদের উপরে পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণকে ধিক্কার জানাই।’’ নিন্দায় সরব হয়েছেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তীরাও।