পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করলেন সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ সুজয় মিস্ত্রি। — নিজস্ব চিত্র।
কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রোগীর পরিজন, সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিয়ে আরও কড়াকড়ি শুরু হল। সোমবার সুপার সুজয় মিস্ত্রির সঙ্গে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন পুলিশ আধিকারিকেরা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে একগুচ্ছ নতুন পদক্ষেপের কথা জানান সুপার। রোগী ছাড়া বিকেল ৫টার পর থেকে হাসপাতালে প্রবেশের উপর রাশ টানা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সিসি ক্যামেরা বসানোর কথাও জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার।
সুজয় জানিয়েছেন, পরিচয়পত্র ছাড়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সকলের জন্য একই নিয়ম। কোথায় কী ভাবে লোকজন প্রবেশ করবেন, সে বিষয়েও পুলিশকে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় এ বার থেকে রোগীর সঙ্গে এক জনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। যদি রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়, সে ক্ষেত্রে সঙ্গে দু’জন প্রবেশ করতে পারবেন। যে সব গাড়ি হাসপাতাল চত্বরে পার্কিং করা হবে, সেগুলির জন্য স্টিকারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে প্রবেশ করতে গেলে রেজিস্টারে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। হস্টেলের প্রবেশপথে নিরাপত্তারক্ষীরা থাকবেন। হাসপাতালের প্রত্যেকটি বিভাগকে পরিচয়পত্র তৈরি করতে বলা হয়েছে। বিকেল ৫টার পর থেকে রোগী ছাড়া অন্যদের প্রবেশে কড়াকড়ি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুপার। পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে রাখবে।
সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে এখন ২৪০টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ৪০টি সিসি ক্যামেরা নতুন করে বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে আরও ৩২০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর অনুমোদন মিলেছে। ১০ অক্টোবরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। গত ২৭ সেপ্টেম্বরের ঘটনার সময় যে নিরাপত্তারক্ষীরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের অপসারণ করে শোকজ় করা হয়েছে।
এর আগে হাসপাতালের ফাঁড়িতে পুলিশকর্মীর সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার রাতে উত্তেজনা ছড়ায় সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের চারতলায় উঠে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় মহিলাদের ওয়ার্ডে। মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এই ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তার, নার্স-সহ সাত জন আহত হয়েছেন। নিরাপত্তার দাবিতে ওই রাত থেকেই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন ওই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার তাঁদের সঙ্গে কর্মবিরতি শুরু করেন নার্সরাও।