তদন্তকারীরা চিহ্নিত করছেন শ্যামাপ্রসাদের জমি। নিজস্ব চিত্র।
বিষ্ণুপুর টেন্ডার দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিপুল সম্পত্তির তথ্য হাতে এল পুলিশের। তাঁর নামে এবং বেনামে একাধিক অ্যাকাউন্টে কোটি টাকার হদিশ আগেই পেয়েছিল পুলিশ। এ বার বিপুল পরিমাণ জমির হদিশ পেলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী রামশঙ্কর মহান্তিকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার বিষ্ণুপুর শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে সেই জমিগুলি চিহ্নিত করেছেন তাঁরা।
পুলিশ হেফাজতে থাকা রামশঙ্করকে জেরা করে সম্প্রতি তদন্তকারীরা জানতে পারেন শ্যমাপ্রসাদ বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে যে টাকা উপার্জন করেছিলেন তার একটা বড় অংশ বিনিয়োগ করেছেন জমি কেনার কাজে। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, মন্ত্রিত্বের একেবারে শেষের দিকে অর্থাৎ ২০১৫ সাল থেকে নামে এবং বেনামে জমি কেনা শুরু করেন শ্যামাপ্রসাদ। এই জমি কেনাবেচায় শ্যামাপ্রসাদের হয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাজ করতেন রামশঙ্কর। জমি কেনার ক্ষেত্রে টাকার লেনদেন হত তাঁর হাত ধরেই।
পুলিশের জেরার মুখে রামশঙ্কর স্বীকার করেছেন শ্যামাপ্রসাদের নামে ও বেনামে কেনা প্রায় সব জমি কেনা হয়েছিল নগদ টাকার বিনিময়ে। কিন্তু কত জমি কিনেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ? সূত্রের খবর, জেরায় এখনও পর্যন্ত রামশঙ্কর যে হিসাব দিয়েছেন তাতে ২০১৫ সাল থেকে শ্যামাপ্রসাদ মোট ১২ বিঘার বেশি জমি কিনেছিলেন। যার বর্তমান বাজারদর প্রায় দশ কোটি টাকার কাছাকাছি। বেশির ভাগ জমির অবস্থান বিষ্ণুপুর শহরের মধ্যে ও শহরের আশেপাশে। তদন্তকারীদের দাবি রামশঙ্কর জেরায় আরও জানিয়েছেন, শহরের মধ্যে যে এলাকাগুলিতে মূলত জমির দাম দ্রুত হারে বাড়ছে সেই এলাকাতেই জমি কেনার ব্যাপারে শ্যামাপ্রসাদের বেশি আগ্রহ ছিল। ঘনিষ্ঠ মহলে শ্যামাপ্রসাদ নাকি জানিয়েছিলেন আগামিদিনে ওই জমিগুলিতে শ্যামাপ্রসাদ প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
তদন্তকারীদের ধারণা এখনও পর্যন্ত শ্যামাপ্রসাদের নামে পাওয়া জমির পরিমাণ হিমশৈলের চূড়ামাত্র। নিজের নামে ছাড়াও ছেলে, মেয়ে এবং ঘনিষ্ঠদের নামেও শ্যামাপ্রসাদ আর বিপুল পরিমাণ জমি কিনে ছিলেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। বেনামে কেনা এই জমিগুলির খোঁজে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তাঁরা।