প্রতীকী ছবি।
এ রাজ্যে শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনে পুলিশ কাজ করছে বলে বরাবরই অভিযোগ করেন বিরোধীরা। এক শ্রেণির পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে একাধিক বার সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। এই পরিস্থিতিতে সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, ‘ছোট-খাটো ভুল’ হলেও পুলিশের ‘আত্মত্যাগ’ মনে রাখার মতো।
পুলিশের ভূমিকাকে কুর্নিশ জানিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত, এখন থেকে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের প্রথম দিন ‘পুলিশ দিবস’ পালন করবে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে পুলিশের জন্য এক গুচ্ছ সুবিধার কথা ঘোষণা করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “পুলিশের আত্মত্যাগ মনে রাখার মতো। আমরা ছোটখাটো ভুল হয়ে গেলে আমরা তাদের গালাগালি দিই। সারাক্ষণই যেন তারা গোলমাল করছে, আইনশৃঙ্খলা সামলাতে পারছে না। একটা দু’টো ঘটনা যদি ঘটেও যায়, সেটা নিয়ে যাঁরা শুধু নিন্দা বা মিথ্যাসুলভ আচরণ করেন, কথায় কথায় বাংলা পুলিশকে বদনাম করে বেড়ান, আমি তাঁদের বলি, নিজেদের রাজ্যের দিকে তাকিয়ে দেখুন। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, দিল্লিতে কী হচ্ছে, তার সঙ্গে তুলনা করলে এ রাজ্যের পুলিশ সেরা। আর কলকাতা পুলিশ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের থেকেও ভাল কাজ করছে।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ১৮ জনের মৃত্যুও হয়েছে। তার পরেও সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে বাহিনী। তাই ১ সেপ্টেম্বর ‘পুলিশ দিবস’ হিসেবে পালন করবে রাজ্য। তিনি বলেন, “সবাই পুলিশকে যাতে সম্মান দেয় এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের মধ্যে সম্পর্কের সেতুবন্ধন করতে পুলিশ দিবস পালিত হবে।”
সরকারের সিদ্ধান্ত, নিচুতলার পুলিশের সুযোগ-সুবিধার দিকে নজর রাখতে ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরি করা হবে। যদিও ২০১২ সালে এই বোর্ড তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা ততটা সক্রিয় ছিল না বলে নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বস্তুত, পুলিশ ট্রেনিং স্কুল, গরফা থানা এবং সল্টলেকে কলকাতা পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নে নিচুতলার পুলিশের মধ্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ সরকারকে প্রবল অস্বস্তিতেও ফেলেছিল। কোভিড পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছিল নিচুতলার পুলিশকর্মীদের সুরক্ষা নিয়েও।
এ দিন মমতার ঘোষণা, “ব্যারাকে গাদা গাদা লোককে থাকতে হয়। কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশে নতুন ব্যারাক হওয়া উচিত। তখন শারীরিক দূরত্ববিধি মেনেই তা তৈরি করতে হবে। ১ সেপ্টেম্বর থেকেই কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের জন্য ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরি করছি।”