Gariahat

Murder: আত্মীয়কে ফোন করেই ফাঁদে পড়ে যায় ভিকি

খুনের পরে সুবীরবাবু ও রবীনবাবুর আঙুল থেকে সোনা ও রুপোর আংটি খুলে নিয়েছিল ভিকি এবং তার সঙ্গী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪৬
Share:

ফাইল চিত্র

গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে কর্পোরেট-কর্তা সুবীর চাকী এবং তাঁর গাড়িচালক রবীন মণ্ডলকে খুনের পরেই মুম্বইয়ে পুরনো পরিচিতদের কাছে পালিয়ে গিয়েছিল অন্যতম মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদার এবং তার সঙ্গী শুভঙ্কর মণ্ডল। সেখান থেকে ভিকি নিজের এক আত্মীয়কে ফোন করতেই তার অবস্থান জানতে পারে পুলিশ। তার পরেই শনিবার রাতে মুম্বইয়ের পারেল ইস্টের সেন্ট জেভিয়ার্স স্ট্রিটে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের পার্কিং লট থেকে ভিকি ও শুভঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ট্রানজ়িট রিমান্ডে ভিকি-শুভঙ্করকে মঙ্গলবার সকালে ট্রেনে মুম্বই থেকে কলকাতায় এনে তোলা হয় আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে। তাদের ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল আদালতে বলেন, ‘‘ওই দু’জন পরিকল্পিত ভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল। তাদের জেরা করে জোড়া খুনে ব্যবহৃত মূল অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। খুনের ঘটনার পুনর্গঠনও জরুরি। তাই তাদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া দরকার।’’ মুম্বইয়ে ভিকিদের অস্থায়ী আস্তানায় পাওয়া জিনিসপত্রের দু’টি তালিকা (‘সিজ়ার লিস্ট’) আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। তবে লালবাজার সূত্রের খবর, আগে ধরা পড়া দুই অভিযুক্তকে নিয়ে পুলিশের
একটি দল এ দিন ডায়মন্ড হারবার গিয়েছিল।

পুলিশি সূত্রের খবর, খুনের পরে সুবীরবাবু ও রবীনবাবুর আঙুল থেকে সোনা ও রুপোর আংটি খুলে নিয়েছিল ভিকি এবং তার সঙ্গী। তদন্তকারীদের দাবি, পরের দিন সকালে ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে ওই আংটি দু’টি এক ব্যক্তির কাছে জমা রেখে তারা পাঁচ হাজার টাকা পায়। সেই টাকা দিয়েই তারা ট্রেনের টিকিট কেটে মুম্বই রওনা দেয় বলে পুলিশের অনুমান। ভিকি আগেও বেশ কিছু দিন মুম্বইয়ে কাজ করেছিল। ডায়মন্ড হারবারের কিছু যুবক মুম্বইয়ে কাজ করেন, তাঁরা ভিকির পরিচিত। এ বার বাণিজ্যনগরীতে পৌঁছে ভিকি প্রথমে তাঁদেরই কাছে যায়। কিন্তু জোড়া খুনের খবর টিভিতে দেখার পরে তাঁরা তাদের আশ্রয় দিতে অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত অন্য পরিচিতদের সাহায্যে নির্মীয়মাণ বহুতলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ জোগাড় করে ভিকি-শুভঙ্কর।

Advertisement

জেরার মুখে ভিকি পুলিশকে জানায়, তার ধারণা ছিল, ওই বাড়িতে এবং সুবীরবাবুর কাছে প্রচুর টাকা ও গয়না আছে। তাই বিশ্বকর্মা পুজোর পরে লুটের ছক কষে সে। পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, ওই বাড়িতে ঢুকে তেতলাটা দেখার অছিলায় রবীনবাবুকে উপরে নিয়ে গিয়ে খুন করে ভিকি-শুভঙ্কর। পরে দোতলায় তাদের বাকি সঙ্গীরা সুবীরবাবুকে খুন করে। তার পরে বাপি মণ্ডল, জাহির গাজি ও সঞ্জয় মণ্ডল ট্রেনে ডায়মন্ড হারবার ফিরে যায়। ভিকি-শুভঙ্কর পরের দিন বাড়ি যায়। তার পরে ট্রেন ধরে মুম্বই গিয়ে গা-ঢাকা দেয়।

কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতে ১৭ অক্টোবরের জোড়া খুনের ঘটনায় পুলিশ আগেই ভিকির মা মিঠু হালদার-সহ তিন জনকে গারদে পুরেছিল। পরে ধরা পড়ে সঞ্জয়। ভিকি-শুভঙ্করকে নিয়ে এ-পর্যন্ত ছ’জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। কেন এবং কী পরিস্থিতিতে ভিকিরা ওই দু’জনকে খুন করেছে, লালবাজার এ দিন সেই বিষয়ে মঙ্গলবার কিছু বলতে চায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement