বারাসতের ময়নায় ডিএসএফি ট্রাফিকের অফিস চত্বরে রাখা হয়েছিল উদ্ধার হওয়া বাজি। বুধবার বিকেলের পরে সরানো শুরু হয়। —নিজস্ব চিত্র।
দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের পরে তল্লাশি চালিয়ে দফায় দফায় বিপুল পরিমাণ বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। কিন্তু সে সব রাখা হবে কোথায়, নিষ্ক্রিয় করা হবে কী ভাবে— তা এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের।
রবিবারের পর থেকে উদ্ধার করা টন টন বাজি প্রথমে রাখা হয়েছিল বারাসত জেলা পুলিশের ডিএসপি ট্রাফিকের অফিস চত্বরে। পরে নিরাপত্তার কারণে তা সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আপাতত আমডাঙা, শাসন ও অশোকনগর থানার তিনটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। জনবসতি থেকে দূরে ওই জায়গায় বাজি রাখার কাজ চলছে।
বারাসতের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া বাজি নিরাপদে রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা নিচ্ছি। বাজি উদ্ধারের পর থেকে দমকলের সাহায্যে নিয়মিত জল দিয়ে সেগুলি ভিজিয়ে রাখা হচ্ছে। বালির মধ্যে রাখা হচ্ছে। বার বার জল দিয়ে বাজি ভেজালে বাজির কার্যকারিতা অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়।’’
একই সঙ্গে পুলিশের দাবি, বাজি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া বা কোথাও সংরক্ষণও বিপজ্জনক। পুলিশ জানিয়েছে, রাজ্যে একমাত্র ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট কর্পোরেশন’ সংস্থা বাজি নষ্ট করতে পারে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকে বাজি নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু হওয়ার কথা।’’
এ দিকে, উদ্ধার হওয়া বাজি নিরাপদে রাখা এবং নিষ্ক্রিয় করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কিছু প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে এক বিবৃতিতে শুভেন্দুর প্রশ্ন, উদ্ধার হওয়া বাজির তথ্য-পরিসংখ্যান কি সঠিক ভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে ‘সিজ়ার লিস্ট’-এ? ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ডেপুটি পুলিশ সুপারের (ট্রাফিক) অফিসে কেন বাজি মজুত করা হয়েছিল— এই প্রশ্ন তুলে তাঁর অভিযোগ, উদ্ধার হওয়া বাজির বড় অংশই অন্যত্র পাচার করা হচ্ছে।
কোনও অভিযোগই মানেনি পুলিশ। তারা জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মূলত ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েত ও বারাসতের আরিফবাড়ি এলাকা থেকে প্রায় ৬০ টন বাজি উদ্ধার হয়েছে। তল্লাশি অভিযান চলছে। উদ্ধার হওয়া বাজির প্রায় সবই ছিল ভাড়া বাড়ি বা গুদাম ঘরে। বেশ কিছু বাজি বোঝাই গাড়িও আটক করা হয়েছে। তবে গাড়িতে থাকা বাজির পরিমাণ এখনও স্পষ্ট নয়।