—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। Sourced by the ABP
খাগড়াগড়ের পরে ডোমকল, এ বার হরিহরপাড়া। বাংলায় ফের জেহাদি সংগঠনের স্লিপার সেলের ঘাঁটি উৎখাত। পুলিশের দাবি, আল কায়দার উপমহাদেশীয় শাখা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা এবিটি-র নয়া শাখা সক্রিয় হয়েছে অসম-বাংলা-কেরল জুড়ে। তিন রাজ্য জুড়ে তল্লাশিতে গত ২৪ ঘণ্টায় এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কেরল থেকে গ্রেফতার হওয়া এক বাংলাদেশিও রয়েছে।
অসম পুলিশের বিশেষ ডিজিপি হরমিত সিংহ জানান, বাংলাদেশে পালাবদলের পরেই সেখানাকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আল কায়দার উপমহাদেশীয় শাখা এবিটি-র প্রধান জসিমুদ্দিন রহমানিকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে। তার পর থেকেই সে ভারতে সংগঠনের বিস্তারে জোরকদমে কাজ শুরু করেছে। এবিটি-র উদ্দেশ্য, অসম ও বাংলায় ঘাঁটি মজবুত করে উপমহাদেশে অশান্তি ছড়ানো।
পুলিশ জানায়, রহমানির ডান হাত মহম্মদ ফারহান ইসরাক এবং রাজশাহীর বাসিন্দা মহম্মদ শব শেখের নেতৃত্বে বাংলায় নতুন জঙ্গি শাখা তৈরির কাজ শুরু করে এবিটি। অসম পুলিশের হাতে ধৃত নুর ইসলাম মণ্ডল এবং মাজিবুর রহমান ঘনঘন মুর্শিদাবাদ এবং জলপাইগুড়িতে যেত। অসমে ধৃতদের জেরা করে মুর্শিদাবাদের কয়েক জনের নাম উঠে আসে। অসম এসটিএফ স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার আব্বাস আলির বাড়ি ও মাগুড়া গ্রামে মিনারুল শেখের বাড়িতে অভিযান চালায়। শব শেখকে ধরা হয় কেরল থেকে। বাকিদের অসমের ধুবুড়ি ও কোকরাঝাড় থেকে ধরা হয়েছে।
অসম পুলিশের দাবি, ধৃতদের মোবাইল পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হ্যান্ডলারদের গত ২ মাস ধরে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। বাংলাদেশে ছাপা ধর্মীয় উন্মাদনা ও উস্কানিমূলক বইও মিলেছে ধৃতদের কাছে। ধৃতেরা নাশকতার জন্য অস্ত্র জোগাড়েও সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিল বলে পুলিশের দাবি।
সূত্রের খবর, মহিলা পাচারের অভিযোগে কয়েক বছর জেল খেটেছে হরিহরপাড়ার বাসিন্দা আব্বাস। ছাড়া পেয়ে মাস ছয়েক আগে বারুইপাড়া হাটে সে বেসরকারি মাদ্রাসা খোলে। আব্বাস নিজেও সেখানে পড়াত। ওই মাদ্রাসায় মিনারুলের ছেলেও পড়ত। সেই সূত্রে দু’জনের ঘনিষ্ঠতা। আব্বাসের গ্রেফতারের পরেই বাড়ি ছেড়েছে তার পরিবারের লোকেরা। অন্য দিকে পাম্পসেট সারাইয়ের কাজ করা মিনারুলের মা আসেমা বিবি বলেন, “আমার ছেলে লেখাপড়াই জানে না। মিস্ত্রির কাজ করে। ও কী ভাবে এ সবের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে?”
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দু’জনকে গ্রেফতারের পরে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই তাদের জেরা করতে অসমে যেতে পারে এ রাজ্যের পুলিশ।