অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।
নতুন বছরের শুরুতেই পাহাড়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিজেপি সূত্রে খবর, শুক্রবার এ নিয়ে দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা-সহ দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেই পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার দায়িত্ব রাজুকে দেওয়া হয়েছে বলে খবর দলীয় সূত্রে।
বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছিলেন শাহ। শুক্রবার তিনি সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)-এর ৬১তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পরে তিনি পাহাড়ের দলীয় নেতাদের সঙ্গে একান্তে বৈঠকও করেন। বিজেপি সূত্রে খবর, ওই বৈঠকেই পাহাড়ের দীর্ঘ দিনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে আলাদা রাজ্য, গোর্খাল্যান্ড এবং পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান নিয়েও। রাজুকে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দায়িত্ব দিয়েছেন শাহই। আগামী জানুয়ারিতেই ওই বৈঠক ডাকা হতে পারে। শাহের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাজু বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পাহাড়ের নানাবিধ বিষয় নিয়ে ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়েছে। ২০২১ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে কথা শুরু হয়েছিল। এ বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। জানুয়ারি মাসেই বৈঠক করার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’’
যদিও রাজুকে বৈঠক ডাকার দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতা তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘এখানে রাজু বিস্তা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার কেউ নন। এটা কেন্দ্র, রাজ্য এবং পাহাড়ের ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা জিটিএ মিলে বৈঠক ডাকবে। অমিথ শাহ দলের নেতা হিসাবে রাজু বিস্তাকে কী বলেছেন, তা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। এ ভাবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয় না। এটা রাজনৈতিক কথা বলেছেন রাজু।’’
নিয়ম অনুযায়ী ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা কেন্দ্র, রাজ্য এবং জিটিএ-র মধ্যে। রাজু জানান, রাজ্য সরকারকে বৈঠকে হাজির থাকার জন্য বলবেন তাঁরা। সাংসদের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারকে উপস্থিত থাকার আর্জি জানাব। কিন্তু ওরা অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটা ওদের বিষয়। তবে আশা করব, সমাধানের লক্ষ্যে ওরা উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পাঠাবে বৈঠকে।’’ কিন্তু বৈঠকে কি অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতৃত্বাধীন জিটিএ-কে ডাকা হবে? রাজু বলেন, ‘‘ভারত সরকার ঠিক করবে, কে বৈঠকে থাকবে, কে থাকবে না। ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা কোনও স্বীকৃত দল নয়। তাই জিটিএ-কে ডাকার কোনও ব্যাপার নেই।’’
এর আগে পাহাড়ের সমস্যা নিয়ে একাধিক বার বৈঠকের আয়োজন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এক বার কলকাতায়, আর এক বার উত্তরকন্যায় বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের তরফে কোনও প্রতিনিধি না-থাকায় ওই বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল। এ বার জিটিএ না-থাকলে ওই বৈঠক কত দূর সফল হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
রাজুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জিটিএ-র মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘জিটিএ-কে ছাড়া কী ভাবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে? ত্রিপাক্ষিক বৈঠক সম্ভবই নয়।’’