দুই পড়ুয়াকেই ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
সঙ্কট এখনও কাটেনি। তবে সামান্য হলেও সোমবার স্কুলপড়ুয়া দিব্যাংশু ভগতের (৭) শারীরিক অবস্থার উন্নতিতে আশার আলো দেখছেন চিকিৎসকেরা। দিব্যাংশুর সহপাঠী ঋষভ সিংহের অবস্থা একই রকম বলে এসএসকেএম হাসপাতালের খবর।
শুক্রবার হুগলির পোলবায় স্কুলে যাওয়ার সময় ঋষভদের পুলকার নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। ঋষভ, দিব্যাংশু-সহ ১৬ জন পড়ুয়া জখম হয়। ঋষভ ও দিব্যাংশু সংজ্ঞা হারিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ নয়ানজুলির নোংরা জলে ডুবে ছিল। তার জেরে দু’জনের ফুসফুস প্রায় অকেজো হয়ে যায়। সোমবার নয়ানজুলিতে তল্লাশি চালিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির ব্লু-বুক, ট্যাক্স সংক্রান্ত নথি এবং বিমার কাগজপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এসএসকেএমের সুপার তথা উপাধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্র এ দিন জানান, দিব্যাংশুর ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড কাজ করছে। ভেন্টিলেটরে রেখে চিকিৎসা চলছে সাত বছরের শিশুটির। তিনি বলেন, ‘‘দিব্যাংশুর ভেন্টিলেটরের মোডও কমানো গিয়েছে। ফলে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে।’’ তবে নোংরা জলের সঙ্গে খুদেদের শরীরে ঢোকা জীবাণু পরে কী ভূমিকা নেবে, সেটা চিকিৎসকদের উদ্বেগে রেখেছে।
ঋষভের ‘এক্সট্রা কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজিনেশন’ বা ইকমো সাপোর্ট সরানো যায়নি বলে জানান উপাধ্যক্ষ। ওই সাপোর্ট সরানোর পরে অন্যান্য পরীক্ষা করা যাবে। ঋষভের বুকে সংক্রমণ হয়েছে। ওষুধে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। ঋষভের বাবা সন্তোষ সিংহ বলেন, ‘‘মাঝখানে ওর প্লেটলেট কমে গিয়েছিল। যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা।’’
পুলিশ জানায়, পুলকারের কাগজপত্র প্লাস্টিকে মোড়া ছিল বলে জলে বিশেষ নষ্ট হয়নি। নথি বলছে, গাড়ির কাগজপত্র এখনও সিঙ্গুরের রোহিত কোলের নামেই আছে। রোহিত দাবি করেছিলেন, গত মার্চে তিনি গাড়িটি শেখ শামিমকে বিক্রি করে দেন। গাড়ির অন্যতম চালক, শেওড়াফুলির বাসিন্দা শেখ শামিমকে পুলিশ ধরতে পারেনি। দুর্ঘটনার পর থেকেই তিনি বেপাত্তা। পুলকারের আদর্শ আচরণবিধি তৈরি করে সেই বিষয়ে গাড়ির মালিক ও চালকদের অবহিত করাতে এ দিন বৈঠক করেন চন্দননগরের অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্র্যাফিক) হরেকৃষ্ণ হালদার। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ ১৬টি থানা এলাকার সব স্কুলের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।
এ দিন বিধানসভায় পোলবার দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানান, পুলকার ও অন্যান্য যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলিতে ২০ কিলোমিটার অন্তর গতি পরিমাপক লেজ়ার স্পিডগান বসানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। যাত্রিবাহী যানের গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের সংযোগ যাতে বিচ্ছিন্ন করা না-থাকে, তা-ও দেখা হবে।